ভাষা সৈনিক ও প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল গফুর আর নেই
ভাষা সৈনিক, প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আবদুল গফুর আর নেই। রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে মারা যান।
ভাষা আন্দোলন স্মৃতি রক্ষা পরিষদের সেক্রেটারি ম আ ম মোক্তাদির দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, উনার শারিরীক অসুস্থতা দীর্ঘ দিনের। জটিলতা বাড়লে গত প্রায় ৩ মাস আগে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবং চিকিৎসা চলছিল। সেখানে আজ দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে মারা যান। রাত ৮ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
অধ্যাপক আবদুল গফুর ১৯২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ির দাদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাবিল উদ্দিন মুন্সী ও মাতা শুকুরুন্নেসা খাতুন। ১৯৪৫ সালে মইজুদ্দিন হাই মাদ্রাসা থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৪৭ সালে ঢাকার ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (কবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। ভাষা আন্দোলন শুরু হলে আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করায় তাঁর লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটে। তবে ১৯৬২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৮ সালের ১৪ নভেম্বর তমুদ্দুন মজলিসের বাংলা মুখপত্র সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তিনি এর সহ-সম্পাদক। পরে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সৈনিক পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার শিরোনাম ছিল 'শহীদ ছাত্রদের তাজা রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত, মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলে ছাত্র সমাবেশে পুলিশের নির্বিচারে গুলিবর্ষণ'। এ কারণে ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে পুলিশ পত্রিকাটির অফিস অবরোধ করে এবং এর সম্পাদক আবদুল গফুর ও প্রকাশক আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
সারাজীবন অধ্যাপক আবদুল গফুর সাহিত্য-সংস্কৃতির একজন একনিষ্ঠ সংগঠক। বড় লেখকদের যেমন তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তেমনি নতুন লেখক সৃষ্টিতে রেখে গেছেন অনন্য ভূমিকা। সম্ভাবনাময়ী বহু তরুণ লেখককে তিনি সহায়তা করেছেন খ্যাতির শীর্ষে উঠতে।
তার উল্লেখযোগ্য বই: বিপ্লবী উমর, সমাজকল্যাণ পরিক্রমা, কোরআনী সমাজের রূপরেখা, খোদার রাজ্য, ইসলাম কী এ যুগে অচল, ইসলামের জীবনদৃষ্টি, ইসলামের রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য, শাশ্বত নবী, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম, বাংলাদেশ আমার স্বাধীনতা, স্বাধীনতার গল্প শোনো, আমার কালের কথা প্রভৃতি।
Comments