একুশের একাত্তর

ঢাকায় ছাত্র হত্যার সংবাদ সেদিনই ওয়্যারলেসে খুলনায় পৌঁছে

কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ১১ মার্চকে মূল দিন হিসেবে ধরে তা সফল করতে খুলনা শহরে পোস্টার লাগানো হয়। একই সঙ্গে দেয়ালে দেয়ালে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান লেখা হয়।
খুলনায় ভাষা আন্দোলন
খুলনা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ছবি: সংগৃহীত

(ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হচ্ছে চলতি বছর। ভাষা আন্দোলনের একাত্তরতম বছরে ডেইলি স্টারের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজন 'একুশের একাত্তর'। ধারাবাহিক এই আয়োজনে ২১ দিনে ডেইলি স্টার প্রকাশ করবে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ২১ জনপদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। আজকের চতুর্দশতম পর্বে থাকছে খুলনার ভাষা আন্দোলনের চিত্র।)

ভাষা আন্দোলনের গণজোয়ার ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিমের জনপদ খুলনাতেও। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবে তমিজুদ্দিন খানের নেতৃত্বে মুসলিম লীগের সদস্যদের বিরোধিতা এবং খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মতো গর্জে উঠেছিল খুলনার ছাত্রসমাজও।

সে বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনার দৌলতপুর কলেজে প্রতিবাদ সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার মুসলিম লীগ নেতা আবদুল হামিদ। সভায় বক্তব্য দেন আমজাদ হোসেন, ধনঞ্জয় দাস, মনসুর আলী, ছাত্রনেতা জগদীশ বসু প্রমুখ। নাজিমুদ্দীনের বক্তব্যের নিন্দা ও ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ১১ মার্চকে মূল দিন হিসেবে ধরে তা সফল করতে খুলনা শহরে পোস্টার লাগানো হয়। একই সঙ্গে দেয়ালে দেয়ালে 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই' স্লোগান লেখা হয়।

১০ মার্চ আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে শৈলেশ ঘোষ, স্বদেশ রায়, সন্তোষ গুপ্ত, ধনঞ্জয় দাস ও তাহমীদ উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ ও সরকার ঘেঁষা রাজনৈতিক কর্মীদের দিয়ে আন্দোলনের বিপক্ষে ও আন্দোলনকারীদের 'ভারতীয় চর' এবং 'পাকিস্তান ধ্বংসে হিন্দুদের চক্রান্ত' হিসেবে অপপ্রচার চালানো হয়। এক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে খুলনার তৎকালীন পুলিশ সুপার মহীউদ্দীন। তা সত্ত্বেও খুলনার ভাষা আন্দোলন দমাতে পারেনি প্রশাসন।

ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্বে খুলনায় ভাষা আন্দোলনকে সংগঠিত করেছিলেন মুসলিম ছাত্রলীগের প্রগতিশীল অংশ (শহিদ-হাশেম গ্রুপ, ছাত্র ফেডারেশন এবং ছাত্র কংগ্রেসের ফরোয়ার্ড ব্লকের কর্মীরা। একই সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব ছিল খুলনার ভাষা আন্দোলনে।

১১ মার্চ তৎকালীন পূর্ববঙ্গের অন্যান্য শহরের মতো খুলনাতেও ধর্মঘট হয়েছিল। সেদিন খুলনার বিএল কলেজ, দৌলতপুর কলেজ, জেলা স্কুল, বিকে মডেল স্কুল, যোশেফ স্কুল, করোনেশন স্কুলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট করে। তারা মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। সবার কণ্ঠে ছিল 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই' স্লোগান।

মিছিল শেষে আন্দোলনকারীরা গান্ধী পার্কে সমাবেশ করে। সমাবেশে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়।

১১ মার্চে খুলনার কর্মসূচি নিয়ে ১৯ মার্চ দৈনিক আজাদে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বলা হয়, 'খুলনা, ১২ই মার্চ। বাংলা ভাষার দাবীতে গণপরিষদের অন্যতম ভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা দাবী করিয়া পাকিস্তান গণপরিষদের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দৌলতপুর কলেজ, স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা পূর্ণ হরতাল পালন করে। ছাত্রলীগ, ছাত্র ফেডারেশন ও ছাত্র কংগ্রেস (ফরোয়ার্ড ব্লক) যুক্তভাবে এই ধর্মঘটের আহ্বান দেন। পাঁচ শতাধিক হিন্দু-মোছলেম ছাত্র মিছিল করিয়া খুলনা সহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিভ্রমণ করেন। স্কুল কলেজের অবাঙালি মোছলেম ছাত্ররা সমোৎসাহে ধর্মঘট ও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।'

ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্বে খুলনায় ভাষা আন্দোলনকে সংগঠিত করেছিলেন মুসলিম ছাত্রলীগের প্রগতিশীল অংশ (শহিদ-হাশেম গ্রুপ, ছাত্র ফেডারেশন এবং ছাত্র কংগ্রেসের ফরোয়ার্ড ব্লকের কর্মীরা। একই সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব ছিল খুলনার ভাষা আন্দোলনে।

আন্দোলনের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের স্বদেশ রায়, সন্তোষ দাসগুপ্ত, ধনঞ্জয় দাস, আনোয়ার হোসেন এবং মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের নেতা তাহমীদ উদ্দীন আহমদ, জিল্লুর রহমান, মতিয়ার রহমান।

১১ মার্চ বিকেল থেকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার শুরু করে। ভাষা আন্দোলনের নেতাদের বাড়িতে হানা দেয়। গ্রেপ্তার করা হয় আনোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমানকে।

১৪ মার্চ পূর্ববঙ্গের অন্যান্য শহরগুলোর মতো খুলনাতেও ছাত্ররা ধর্মঘট করে।

১০ ও ১১ মার্চ খুলনায় যেসব আন্দোলনকারীদের পুলিশ আটক করেছিল তাদের অনেককে কয়েকদিনের মধ্যে ছেড়ে দিলেও ছাড়া হয়নি আনোয়ার হোসেন ও স্বদেশ বসুকে। আনোয়ার হোসেনকে স্থানান্তরিত করা হয় রাজশাহী কারাগারে। পরবর্তীতে খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকাণ্ডে তিনি শহীদ হয়েছিলেন। স্বদেশ বসু মুক্তি পেয়েছিলেন ৭ বছর পর।

১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দীনের 'উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা' ঘোষণার মধ্য দিয়ে পূর্ববঙ্গের অন্যান্য শহরের মতো খুলনার ছাত্র-জনতাও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে খুলনার আজাদ গ্রন্থালয়ে বৈঠকে মিলিত হন প্রগতিশীল ছাত্ররা। বৈঠকে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে পোস্টার ছাপানো এবং মহল্লায় প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।

২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের মূল দিনকে সামনে রেখে ২০ ফেব্রুয়ারি খুলনা শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টারিং হয়।

২১ ফেব্রুয়ারি খুলনা শহরে ধর্মঘট ও হরতাল হয়। স্কুল-কলেজের ছাত্ররা এবং আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সেদিন মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।

২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের নেতারা খুলনার স্কুলগুলোয় গিয়ে ছাত্রদের ক্লাস বর্জনের অনুরোধ করেছিলেন। বিকে স্কুল ও সেন্ট যোসেফ স্কুলের ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করে হরতাল করে।

খুলনা করোনেশন গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা নিজেদের উদ্যোগে স্কুলের দেয়ালে বাংলা ভাষার পক্ষে পোস্টার লিখে। তবে খুলনা জেলা স্কুলে হরতাল হয়নি। দৌলতপুর কলেজে হরতাল হয়েছিল। মিছিল শেষে দৌলতপুর কলেজের ছাত্ররা সমাবেশের আয়োজন করে।

কাছাকাছি সময়ে ঢাকা থেকে খুলনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্র কাজী নুরুল ইসলাম ও ঢাকা মেডিকেল ছাত্র এমএ মানাফ। এরপরই খুলনার ভাষা আন্দোলনে গতি বেড়ে যায়।

২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পুলিশের গুলিতে ছাত্র হত্যার সংবাদ সেদিনই ওয়্যারলেসে পৌঁছে যায় খুলনা শহরে। এরপরই অন্য শহরগুলোর তুলনায় তুলনামূলক শান্ত খুলনা গর্জে উঠে। ছাত্ররা সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে রাস্তায় নামে। মিছিলে স্লোগান উঠে, 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই', 'নুরুল আমীনের কল্লা চাই'।

সেদিন বিকেলে খুলনার গান্ধী পার্কে জরুরি সভা হয়। সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ মান্নান।

২২ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যত মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় খুলনা। সেখানকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন সর্বস্তরের মানুষ। তারা পরনের কালো কাপড় কেটে কালো ব্যাজ বানিয়ে মিছিলে অংশ নেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনায় হরতাল হয়। ছাত্র-জনতার মিছিল 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই', 'খুনী নুরুল আমীনের বিচার চাই' স্লোগানে প্রকম্পিত হয় শহরের পথঘাট। বিশাল মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫০০/৬০০ ছাত্রী। পরে হিলা পার্ক মহেন্দ্র হিলে এসে মিছিল শেষ হয়।

ছাত্রীদের মিছিলে নেতৃত্বে ছিলেন মাজেদা আলী, আনোয়ারা খাতুন, রোকেয়া খাতুন শিরি, লুৎফুন নাহার, রাবেয়া কৃষ্ণা, ফরিদা মজুমদার, খায়রুন নাহার বেবী প্রমুখ। এটি ছিল খুলনায় ছাত্রীদের প্রথম মিছিল।

২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ছাত্রনেতা এমএ গফুরের সভাপতিত্বে খুলনার মিউনিসিপ্যাল পার্কে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন আবু মোহাম্মদ ফেরদৌস, আলতাফ খান প্রমুখ।

২৪ ফেব্রুয়ারি এমএ গফুরকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় ১১ সদস্যের রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। পরিষদের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন আবু মোহাম্মদ ফেরদৌস, নুরুল ইসলাম নুরু, এম এ বারী, একে শামসুদ্দীন, আলতাফ হোসেন খান, জাহিদুল হক, খন্দকার এনামুর রহমান প্রমুখ।   এরপরই আন্দোলন খুলনার প্রত্যন্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে।

সেদিন খুলনার দৌলতপুর কলেজের ছাত্ররা এক সভায় পুলিশের গুলিতে ছাত্র হত্যার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।

২৬ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক আজাদ পত্রিকায়। এতে বলা হয়, 'দৌলতপুর কলেজের ছাত্রবৃন্দ এক সভায় মিলিত হইয়া ঢাকার ছাত্র ও জনসাধারণের উপর পূর্ববঙ্গ সরকারের "বৃটীশ সুলভ হামলার" নিন্দা করেন এবং পুলিশ জুলুমের তদন্ত করিয়া দোষী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অবলম্বনের দাবী জানান হয়। শহীদ ছাত্রদের রূহের মাগফেরাত ও তাঁহাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।'

২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে হরতাল হয়। সেদিন বিকেলে মিউনিসিপ্যাল পার্কে জনসভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একেএম আবদুল লতিফ।

২৬ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আজাদে সেই জনসভার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সংবাদে বলা হয়, 'নিখিল পূর্ব পাকিস্তানের মোছলেম ছাত্রলীগের খুলনা জেলা শাখার সভাপতি জনাব কে এম আবদুল লতীফ এক বিবৃতিতে ঢাকায় পুলিশী জুলুমের নিন্দা করিয়া পরিষদে খুলনার তিনজন এম-এল এ'কে নুরুল আমীন সরকারের পার্লামেন্টারী পার্টি হইতে পদত্যাগ করিবার অনুরোধ জানাইয়াছেন। তিনি ঢাকার শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা এবং হাসপাতালে আহতদের আশুনিরাময় কামনা করিয়াছেন।'

এদিন একই সঙ্গে খুলনা আইনজীবী সমিতিও ঢাকায় পুলিশের গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানায়। কাছাকাছি সময়ে ঢাকা থেকে খুলনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্র কাজী নুরুল ইসলাম ও ঢাকা মেডিকেল ছাত্র এমএ মানাফ। এরপরই খুলনার ভাষা আন্দোলনে গতি বেড়ে যায়। খুলনা ও এর আশেপাশের এলাকায় সমাবেশ হয়।

এর ধারাবাহিকতায় ২৭ ফেব্রুয়ারি দৌলতপুরে, ২৮ ফেব্রুয়ারি মিউনিসিপ্যাল পার্কে, ১ মার্চ নোহাটী স্কুলে, ৪ মার্চ দৌলতপুর কলেজে ও ৫ মার্চ স্থানীয় পার্কে সমাবেশ হয়।

১৯৫৩ সালে খুলনার দৌলতপুর মাঠে ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি হয়।

তথ্যসূত্র: ভাষা আন্দোলন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া/ আহমদ রফিক

ভাষা আন্দোলন কোষ প্রথম খণ্ড/ এম আবদুল আলীম

দৈনিক আজাদ, ১৯ মার্চ ১৯৪৮ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago