Skip to main content
আগস্ট ১৫, ২০২২  //  সোমবার
E-paper English
T
আজকের সংবাদ
বঙ্গবন্ধুর ৫ পলাতক খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার অগ্রগতি নেই ‘আপনাদের মধ্যে হাইকমান্ড কে’ প্রশ্ন করতেই ব্রাশফায়ার ‘খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর জোর চেষ্টা চলছে’ শিকলবন্দী শৈশব যে শোক ভুলবার নয় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া : পুতিন ভারতকেও ২-১ ব্যবধানে হারানোর হুঙ্কার কাইয়ার ‘মৃত্যুর আগে বাঁধটা দেখে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল’ জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়িতে যেভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয় ১২ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ শুরু টেলিভিশনে জাতীয় শোক দিবসের সিনেমা-নাটক আজ জাতীয় শোক দিবস দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে কেমন আছে সাধারণ মানুষ? টিকটক লগইনে সমস্যায় পড়ছেন বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা
The Daily Star Bangla
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • E-paper
  • English
আজকের সংবাদ
বঙ্গবন্ধুর ৫ পলাতক খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার অগ্রগতি নেই ‘আপনাদের মধ্যে হাইকমান্ড কে’ প্রশ্ন করতেই ব্রাশফায়ার ‘খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর জোর চেষ্টা চলছে’ শিকলবন্দী শৈশব যে শোক ভুলবার নয় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া : পুতিন ভারতকেও ২-১ ব্যবধানে হারানোর হুঙ্কার কাইয়ার ‘মৃত্যুর আগে বাঁধটা দেখে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল’ জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়িতে যেভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয় ১২ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ শুরু টেলিভিশনে জাতীয় শোক দিবসের সিনেমা-নাটক আজ জাতীয় শোক দিবস দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে কেমন আছে সাধারণ মানুষ? টিকটক লগইনে সমস্যায় পড়ছেন বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা
The Daily Star Bangla
সোমবার, আগস্ট ১৫, ২০২২ | সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা
English T
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
সাহিত্য

আমি কেন ভাইস চ্যান্সেলর হতে চাইনি

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
বৃহস্পতিবার, আগস্ট ৪, ২০২২ ১০:০০ পূর্বাহ্ন
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

লেখক, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তার ৮৭তম জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৩ জুন বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একক আত্মজৈবনিক বক্তৃতা দেন। ওই বক্তৃতায় উঠে আসে তার মা-বাবার স্মৃতি, শৈশব কৈশোরের দিনগুলোর বর্ণনা, শিক্ষা ও সাহিত্য জীবন এবং মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরের সমাজ, রাষ্ট্র ও রাজনীতির নানা অনুষঙ্গ। সবমিলিয়ে তার এই বক্তৃতা যেন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসেরই অংশ।

এই শিক্ষাবিদের দেওয়া আত্মজৈবনিক বক্তৃতার কথাগুলো ৭ পর্বে প্রকাশিত হচ্ছে দ্য ডেইলি স্টার বাংলায়। দীর্ঘ বক্তৃতাটি অনুলিখন করেছেন ইমরান মাহফুজ, খালিদ সাইফুল্লাহ ও মোহাম্মদ আবু সাঈদ। আজ এর শেষ পর্ব প্রকাশিত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

আমার কাজটাকে আমি সাংস্কৃতিক কাজ হিসেবে দেখি। এই যে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন, ওসমানী উদ্যান সংরক্ষণের আন্দোলন, আড়িয়াল বিল রক্ষার আন্দোলন—এইসব আন্দোলনে যে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলাম, তা কিন্তু পরিবেশবাদী হিসেবে নয়, এটা করেছি অধিকারের জন্য।

ওসমানী উদ্যান একটা অডিটোরিয়াম বানানোর জন্য নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু, তা তো ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। আমি এইসব আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলাম এই চেতনা থেকেই।

আমার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ যে, আমি দল করতাম। আমাকে দাঁড়াতে হতো নির্বাচনে। আপনারা ভাবতে পারবেন না—আইয়ুব খানের সংবিধান কেমন ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কেমন ছিল! তার বিরুদ্ধে ছাত্ররা আন্দোলন করেছে, আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছে।

বিক্রমপুরের মতো ‘ঈশ্বরবর্জিত’ এলাকায় চৌধুরীরা কেন এসেছিলেন

Read more

বাংলাদেশ যদি স্বাধীন না হতো, তাহলে এই আইন বাতিল হতো না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও সে আইন কিন্তু বাতিল হচ্ছিল না, নতুন আইন পাস হচ্ছিল না। তখন আমাদের আবার তদবিরে নামতে হলো। গণমাধ্যমে কথা বলতে হলো।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সাথে সাথে প্রতিক্রিয়াশীলরা তো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কিন্তু, আমরা যারা প্রগতিশীল ছিলাম, আমাদের মধ্যে দুইটা ভাগ হয়ে যায়। একদল প্রশাসনের পক্ষে। আর আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার কণ্ঠে কথা বলছি। আমরা স্বায়ত্তশাসন কার্যকর করতে চেয়েছি। আমরা একটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাচ্ছিলাম—বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমন করে গণতন্ত্রের অনুশীলন করতে হয়।

সেজন্য আমাদের আলাদা দল করতে হলো। আমরা ছিলাম গোলাপী দল আর প্রতিপক্ষ ছিল নীল দল। সিনেটে ৩৫ জন সদস্য নির্বাচিত হতে হতো দল হিসেবে টিকে থাকার জন্য। কিন্তু, তা আমাদের জন্য কঠিন ছিল।

দেখা গেল, আমাদের গোলাপী দল থেকে একজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হয়ে গেছে। তখন আবার আমাদের দলে অনেকে প্রবেশ করতে লাগল। তখন আমরা সাদা দল করলাম। সাদা মানে কোনো রঙ থাকবে না। সেখানে ফিজিক্সের প্রফেসর হারুনুর রশিদ, মমতাজুর রহমান তরফদারকে আনলাম।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অভিজ্ঞতা

Read more

'৯১ সালে দেখা গেল, আমাদের সাদা দলের লোকরা খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে গেল। সকালে হাঁটছি, একজন এসে বলল, 'আপনাকে তো ছবিতে দেখলাম না'। কেন, কি হয়েছে? বলল, 'রাতে আপনাদের দলের লোকরা তো খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে গেল।' তখন‌ই আমি সাদা দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করলাম। তারপরও সিনেটে, ডিনে বহুবার আমি (নির্বাচনে) দাঁড়িয়েছি, আমাকে দাঁড়াতে হয়েছে, বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছি।

একবার এক বন্ধুকে আমি বললাম, 'আমি তো এবার‌ও দাঁড়িয়েছি।' তো তিনি বললেন, 'আপনি আবার বসলেন কবে?' চারবার দাঁড়িয়েছিলাম। প্রথমবার জিততে পারিনি, পরের তিনবার আমি বিজয়ী হয়েছিলাম। দ্বিতীয়বার তো আমি সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়েছি। তখন রটে গেল যে, আমিই ভাইস চ্যান্সেলর হব।

বিচিত্রা তখন খুব নামী পত্রিকা। তারা একটা চিঠি ছেপেছিল—বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভিসি হয়েছেন মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, আবদুল মতিন চৌধুরী, ফজলুল হালিম চৌধুরী। এবার‌ও কি চৌধুরী বংশের কেউ নিয়োগ পাবে?

তখন তো উপাচার্য নিয়োগের সময়। এরশাদ আসলো ক্ষমতায়। তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী একজনকে ভাইস চ্যান্সেলর বানালেন।

আমি কেন ভাইস চ্যান্সেলর হতে চাইলাম না? কেউ বলেন, আমি ভীতু; কেউ বলেন, এমন কোনো দরজা নেই যেখানে আমি ক্ষমতার জন্য ধরনা দেইনি। কেউ বলেন, এরা কোনো গবেষণা করে না; খালি দলাদলি করে।

প্রথম বিদ্রোহ পিতার বিরুদ্ধে

Read more

আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষকের কাছে যেতাম ভোটের জন্য। একবার আমাদের দল থেকে হুমায়ূন আহমেদ দাঁড়িয়েছে। সে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু, সে সবার সাথে মিশত না। ভাবগাম্ভীর্যের কারণে তাকে ভোট দেয়নি।

একজন শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন যে, আমরা শুধু দলাদলি করি। কিন্তু, আহমদ শরীফের গবেষণার কাগজগুলো যদি বিছিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তো কার্জন হলের শেষ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।

আমরা দলাদলি করি কেন? কারণ আমরা স্বায়ত্তশাসন চাই। যাই হোক, এরশাদ আমাদের তিনজনের সাক্ষাৎকার নিলেন। প্রথম, মুজিব খান। আমি তাকে বলেছিলাম যে, আমি দায়িত্ব নেব না। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, যে এরশাদের আমলে আমাকে ভিসির দায়িত্ব পালন করতে হবে!

আমার ছাত্র জিয়াউদ্দিন বাবলু। সে অত্যন্ত খারাপ একটা কাজ করেছিল। সে ছিল ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু, এরশাদের দলে যোগ দিয়েছিল। এটা ইতিহাসে নজিরবিহীন যে, ডাকসুর জিএস সরকারি দলে যোগ দিয়েছে।

আমি যত না বাবার সন্তান, তার চেয়ে বেশি মায়ের

Read more

জিয়াউদ্দিন বাবলু আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিল, 'আমি কাল সকালে এরশাদের কাছে গিয়ে আপনার কথা বলব।' তখন আমি বলেছিলাম, 'তুমি যদি আমার ছাত্র হ‌ও, তাহলে আমার জন্য কোনো তদবির কোরো না।' তো পরদিন, আমাদের যে ইলেকট্রিশিয়ান, সে আমার স্ত্রীকে এসে বলছে, 'আপা, শুনলাম স্যার নাকি ভাইস চ্যান্সেলর হবে? তাহলে তো কপাল খুলে যাবে'।

আমি এদের যে আশা, আগ্রহ দেখলাম, তা তো পূরণ হবে না। আমার এক সহপাঠী হরলিক্স নিয়ে চলে আসলো; তার ছেলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। সবাই দেখা করছে, কথা বলছে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে। তখন সামরিক শাসন। আবার এদের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা!

আমি আগে ডিন হয়েছিলাম। তখনই বুঝেছিলাম যে, এইসব আমার কাজ নয়। তখন আমি আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, তার কী মত? সে বলল, 'আমরা যদি এখান থেকে ভাইস চ্যান্সেলরের বড় বাড়িতে উঠি এবং কয়েক বছর পর ফেরত আসি, তাহলে সামাজিকভাবে আমাদের অবস্থান কেমন হবে? আমি কিন্তু লেকচারারকে বিয়ে করেছিলাম।' তখন বুঝতে পেরেছি যে, সে চায় না।

তো, এরশাদ সাহেব আমাদের ইন্টারভিউ নিচ্ছেন। তিনি বললেন, 'শুনেছি, আপনি নাকি (উপাচার্য) হতে চান না?' আমি বললাম, 'হ্যাঁ, চাই না।' তিনি আবার প্রশ্ন করার আগেই বললাম, 'আমি (প্রার্থী হিসেবে) দাঁড়িয়েছি এই কারণে যে, আমি গণতন্ত্র চাই, স্বায়ত্তশাসনের কার্যকারিতা চাই, একটা ভিন্ন কণ্ঠ চাই।' তখন তিনি খুশি হয়ে আমাকে বিদায় করে দিলেন।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

রাষ্ট্র বদল হয়েছে, ঔপনিবেশিকতা বদল হয় নাই

Read more

তখন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন এ কে এম সিদ্দিক সাহেব। কিন্তু, তাকে তারা (উপাচার্য) করবেন না। কারণ, তিনি তাদের কথাবার্তা শুনতেন না। শামসুল হক সাহেবকে করলেন, তিনি ৩ নম্বরে ছিলেন। এরপর আমি আরও দুইবার দাঁড়িয়েছি। কিন্তু, তা বাধ্য হয়ে। মানে কমপক্ষে তিনজন তো লাগে। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য আমি দাঁড়িয়েছি। একবার (উপাচার্য) হলেন মনিরুজ্জামান মিয়া, আরেকবার এমাজউদ্দিন আহমেদ—দুইবার‌ই আমি প্যানেলে নির্বাচিত হয়েছি।

রিয়াজুদ্দিন সাহেব আমাদের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন। উপদেষ্টা ছিলেন। পরে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি আমাকে বললেন, 'আমার খুব শখ আপনাকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দেখার।' আমি বললাম, 'কিন্তু, আমি তো হব না!'

একবার মন্ত্রণালয় থেকে ঠিক হয়েছিল, ইউজিসিতে আমাকে নেবে। তো, একজন অ্যাডিশনাল সেক্রেটারিকে দায়িত্ব দেওয়া হলো। তিনি আত্মজীবনী লিখেছেন এবং আমাকে এক কপি উপহার দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন—তার জীবনে ব্যর্থতা খুব কম। দুয়েকটা ব্যর্থতার মধ্যে একটা হলো, আমাকে ইউজিসির মেম্বার বানাতে না পারা‌। তার ধারণা ছিল, আমাকে বলার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাব। আমি যখন রাজি হচ্ছিলাম না, তখন আমাকে বিভিন্ন সুবিধার কথা তিনি বললেন। কিন্তু, আমি সরাসরি বলে দিলাম, আমি পারব না। তিনি লিখেছেন, তার যে ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা তা আনন্দদায়ক ছিল।

তো এইসব পদ-পদবীর প্রতি আমার যে বিতৃষ্ণা, তার পেছনে একটা ইতিবাচক মনোভাব আছে। তা হলো, আমি সবসময় শিক্ষক‌ই থাকতে চেয়েছি, আমলা হতে চাইনি। আমার বাবা আমাকে আমলা বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আমি শিক্ষকতায় এসেছি।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

সতর্কবাণী পেলাম, যেন রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজ না করি

Read more

আমি জীবনে অনেক পত্রিকা সম্পাদনা করেছি। 'ইউনিভার্সিটি স্টাডিজ' সম্পাদনা করেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'কনভোকেশন স্পিচেস' সম্পাদনা করেছি, লেখক সংঘের 'পরিক্রম' পত্রিকা সম্পাদনা করেছি। এত সম্পাদনা কেন করেছি? আমি মনে করি, সমস্ত কিছু সংঘবদ্ধভাবে করতে হবে, একসাথে লিখতে হবে, বলতে হবে; একলা কিছু হবে না। এজন্য আমি পত্রিকা সম্পাদনা করেছি।

আমি অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা—এগুলো আমার উদ্যোগে হয়েছে। কিন্তু আমি দেখলাম, এগুলোর মধ্যে একটা আমলাতান্ত্রিক ব্যাপার আছে। যে কারণে আমি বেরিয়ে গেলাম।

আমি যখন প্রথম চাকরিতে যোগ দেই, তখন আমরা 'সমাজ রূপান্তর কেন্দ্র' করলাম। উদ্দেশ্য ছিল, সমাজের পরিবর্তন লক্ষ্য করা, গবেষণা করা এবং তাতে প্রভাব বিস্তার করা। এজন্য আমরা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করব, পত্রিকা করব। 'নতুন দিগন্ত' নামে পত্রিকা বের‌ও হলো। বক্তৃতা, সেমিনার—সব পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু, সেভাবে তেমন বিকশিত হয়নি।

তিন বছর আগে একটা অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম যে, আমাদের একটা বুদ্ধিজীবী সংঘ করা দরকার। সেই সংঘের নাম হবে 'সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘ'। এটা আহমদ শরীফ সাহেবের স্বপ্ন ছিল। আমরা তার বাসায় সভা করতাম। কিন্তু, তিনি হঠাৎ মারা গেলেন। তারপরও আমরা সভা করেছি। একটা সভায় আমি বলেছি যে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি দরকার। এই সংঘ কোথায় কাজ করবে? সারাদেশে কাজ করবে।

এই কাজটা হবে পাঠাগারকেন্দ্রিক। পাঠাগার শুধু ব‌ই পড়া নয়, ব‌ই পড়ার পাশাপাশি বক্তৃতা, সেমিনার, প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা, কিশোর আন্দোলন, সামাজিক কর্মকাণ্ড—ইত্যাদি সবকিছুর সমন্বয় হবে। এগুলো হবে স্বায়ত্তশাসিত। কেন্দ্র শুধু একটা বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবে। তা হচ্ছে মতাদর্শ। আমরা সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করব, কিশোর আন্দোলন গড়ে তুলব। আমি কিশোর আন্দোলনকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

পৃথিবীর হাজার হাজার বছরের সভ্যতার একটা ক্রান্তিকালে আজকে আমরা অবস্থান করছি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে—আগামীর সভ্যতা কি ধ্বংসের দিকে যাবে, না সৃষ্টির দিকে যাবে? যদি সৃষ্টির দিকে যেতে হয়, তাহলে হাজার বছরের যে ব্যক্তিগত ঐতিহ্য, তাকে ভাঙতে হবে, সামাজিক মালিকানা আনতে হবে।

পৃথিবী বাঁচবে, যদি সামাজিক মালিকানা আসে। পুঁজিবাদের যে নৃশংসতা, বীভৎসতা তা আমরা দেখব, দেখতেই থাকব—এই কথাটি আমার উপলব্ধির মধ্যে আছে। এই উপলব্ধি থেকেই আমরা 'সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘ' করতে চেয়েছিলাম। আবেদনটা ছিল তরুণদের কাছে। ত্রিশ বছরে ম্যানিফেস্টো লেখা মার্ক্সের স্বপ্ন আজকেও তরুণদের মধ্যে আছে। কিন্তু, তা আমরা বিকশিত করতে পারছি না। সেজন্য আজকে অপরাধ, ধর্ষণ, নৃশংসতা বেড়েছে।

আমাদের সংস্কৃতিতে বিষণ্নতা আছে, বিদ্রোহ আছে। আপনি যদি জীবনানন্দ দাশের কবিতার কথা বলেন, সেখানে বিষণ্ণতা আছে, প্রকৃতি আছে, আত্মহত্যা আছে, ইতিহাস আছে, মানুষ আছে, দাঙ্গার প্রভাব আছে। কিন্তু, তিনি যে ঝরাপালক লিখেছিলেন, তাতে নজরুল ইসলামের প্রভাব ছিল। সেই প্রভাব থেকে তিনি বেরিয়ে এসে তার অসাধারণ প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েছেন এবং আমাদেরকে কাব্য উপহার দিয়েছেন—বিষণ্ণতার কাব্য। আমাদের এখানে জীবনানন্দ দাশ আবিষ্কৃত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পরে।

মুক্তিযুদ্ধের পর যে বিষণ্ণতা, হতাশা দেখা দিয়েছিল তা আছে জীবনানন্দের কবিতায়; বিপরীতে আছে নজরুল ইসলামের কবিতা, সাম্যবাদী, সর্বহারা ইত্যাদি। বিদ্রোহ ও বিষণ্ণতা দুইটাই আমাদের সংস্কৃতিতে আছে এবং এর মধ্যে একটা দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক আছে। বিদ্রোহের জায়গাটা যদি আমরা সামনে আনতে না পারি তাহলে আমরা বিষণ্ণতার মধ্যে পড়ব, হতাশার মধ্যে পড়ব।

বিষণ্ণতা খুবই সংক্রামক রোগ। করোনা ভাইরাসের চেয়েও দ্রুত সংক্রামক। যদি আমাদের এই বিষণ্ণতা রোধ করতে হয়, তাহলে যেতে হবে সেই সংস্কৃতির দিকে যা ব্যক্তি মালিকানাকে ভেঙে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। এভাবে একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে।

আজকে সামাজিক বিপ্লব ছাড়া আর কোনো পথ নেই। আমরা যারা সংস্কৃতিকর্মী তাদের কাজ হবে—এই বিপ্লব যেন সম্ভব হয় তার জন্য অনুশীলন করা, গবেষণা করা, সংস্কৃতির চর্চা করা এবং সুসংগঠিত হ‌ওয়া।

Related topic
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী / সামাজিক বিপ্লব / পুঁজিবাদ / ওসমানী উদ্যান / মুক্তিযুদ্ধের চেতনা / উপাচার্য / ভাইস চ্যান্সেলর
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

Related News

১ মাস আগে | সাহিত্য

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর আত্মজৈবনিক বক্তৃতা আগামীকাল

কথা রাখেনি ‘সরকারের উচ্চপর্যায়’, স্বপদে আছেন শাবিপ্রবি উপাচার্য
৩ দিন আগে | ক্যাম্পাস

কথা রাখেনি ‘সরকারের উচ্চপর্যায়’, স্বপদে আছেন শাবিপ্রবি উপাচার্য

২ দিন আগে | ক্যাম্পাস

জাবির উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেলেন অধ্যাপক আমির হোসেন

১ মাস আগে | বাংলাদেশ

মা ছিলেন বাস্তববাদী, মায়ের অনেক গুণ পেয়েছি: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
১ সপ্তাহ আগে | সাহিত্য

রাষ্ট্র বদল হয়েছে, ঔপনিবেশিকতা বদল হয় নাই

The Daily Star  | English
12h ago|National Mourning Day 2022

Bangabandhu: Who but him could have made it happen?

Most nation-states are constituted of diverse groups of people coming from different religions, cultures, languages, and ethnicities.

33m ago|SHOUT

An Indian in Dhanmondi 32

The Daily Star
Follow Us
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2022 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.