জার্মানিতে হুয়াওয়ে-জেডটিই নিষিদ্ধের সম্ভাবনায় চীনের ক্ষোভ

পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, বেইজিং এর সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এই ২ চীনা প্রতিষ্ঠান জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর হুমকির সৃষ্টি করে।
জার্মানিতে ২০১৯ এর মার্চে ৫জি সেবার নিলাম হয়েছিল। ছবি: রয়টার্স
জার্মানিতে ২০১৯ এর মার্চে ৫জি সেবার নিলাম হয়েছিল। ছবি: রয়টার্স

জার্মানির ৫জি নেটওয়ার্ক থেকে চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে ও জেডটিইকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে, এমন সংবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। বিষয়টিকে 'রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার' বলেও আখ্যায়িত করে চীন।

আজ বুধবার জার্মানিতে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই সংবাদ জানিয়েছে।

বার্লিনে অবস্থিত দূতাবাস বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, 'যদি প্রতিবেদনটি সত্য হয়, তবে চীন খুবই বিস্মিত এবং অসন্তুষ্ট, কারণ সংশ্লিষ্ট জার্মান সরকারী বিভাগগুলো কোনও বাস্তব ভিত্তি ছাড়াই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'

চীনের দূতাবাস জার্মানির এই উদ্যোগকে জাতীয় নিরাপত্তার ধারণার সরলীকরণ, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং চীনের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কে ফাটল ধরাতে সক্ষম বলে অভিহিত করে।

জার্মান সংবাদপত্র জেইত অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, বার্লিন টেলিকম অপারেটরদের চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে ও জেডটিইর কিছু উপকরণ ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর আগে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র একই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।

এ সংবাদ প্রকাশের পরই এলো বার্লিনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের প্রতিক্রিয়া।

জেইত অনলাইনের ভাষ্য মতে, জার্মানির সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেশ কয়েক মাস ধরে দেশটির ৫জি নেটওয়ার্কে সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনা করার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, বেইজিং এর সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এই ২ চীনা প্রতিষ্ঠান জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর হুমকির সৃষ্টি করে। এ কারণে জার্মানিও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক নির্মাণে এদেরকে বিবেচনা করতে চাইছে না।

হুয়াওয়ে ও জেডটিই নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

২০২১ সালে জার্মানি পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা মানদণ্ডের উন্নয়নে নতুন আইন পাস করে। তবে এতদিন পর্যন্ত পশ্চিমের অন্যান্য দেশের মতো চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি বার্লিন।

চীনের প্রযুক্তি থেকে সরে আসার উদ্যোগ বাড়ালেও বাস্তবতা হল, জার্মানি তাদের ৫জি নেটওয়ার্কের জন্য হুয়াওয়ের ওপর বড় আকারে নির্ভরশীল। সংস্থাটি জার্মানির ৬০ শতাংশ নেটওয়ার্ক টাওয়ার ও এ সংক্রান্ত অবকাঠামো সরবরাহ করেছে বলে টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যান্ড কনসাল্টের এক সমীক্ষায় জানা গেছে।

চীন দূতাবাসের বিবৃতিতে আরও জানা গেছে, জার্মানি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে দেশটিতে ৫জি সেবার রোলআউট বিলম্বিত হতে পারে।

দূতাবাস আরও জানায়, 'জার্মান সরকারের উচিৎ নিজ দেশের মানুষের যৌক্তিক বক্তব্যগুলোকে আমলে নেওয়া'।

 

Comments