ওডিশায় ট্রেন দুর্ঘটনার মূল কারণ ভুল সিগনাল: রেলমন্ত্রী

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বালেশ্বরের কাছে বহানগা বাজারে স্যার এম বিশ্বেশ্বর টার্মিনালের এ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯৪ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ।
ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ঘটনাস্থল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনের কোচগুলো সরানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ঘটনাস্থল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনের কোচগুলো সরানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

ভারতের ওডিশা রাজ্যের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শেষ হয়েছে। ভুল সিগনালকে এর মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

আজ রোববার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি মন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, খুব শিগগির প্রতিবেদন আকারে বিস্তারিত জানানো হবে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বালেশ্বরের কাছে বহানগা বাজারে স্যার এম বিশ্বেশ্বর টার্মিনালের এ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯৪ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

ওডিশার এই ঘটনা ভারতে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহতম ট্রেন দুর্ঘটনাগুলোর একটি। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ৩টি পৃথক লাইনে ২টি যাত্রীবাহী ট্রেন ও ১টি মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রেনগুলো লাইনচ্যুত ও ১৭টি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব গণমাধ্যমকে বলেন, 'দুর্ঘটনার পেছনের মূল কারণটি চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা আজ থেকে এই রেলপথটি মেরামতের চেষ্টা চালাবো। সব মরদেহ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য আগামী বুধবারের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করা, যাতে এই পথে আবারও ট্রেন চলাচল করতে পারে।'

রেলমন্ত্রী সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'তদন্ত শেষ হয়েছে। রেল নিরাপত্তা কমিশনার দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। তখন সব তথ্য জানা যাবে।'

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, একটি 'ভুল' সিগনালের (নির্দেশনার) কারণে করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি পাশের লাইনে ঢুকে পড়ে, যাকে 'লুপ লাইন' বলা হয়। সেখানে কয়েক মিটার সামনে মালবাহী ট্রেন রাখা ছিল। জ্যেষ্ঠ রেল কর্মকর্তাদের প্রাথমিক তদন্ত মতে, যে লাইনে ২ ট্রেনের সংঘর্ষ হয়, সেটি 'আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত' ছিল।

হিন্দুস্তান টাইমস এই তদন্ত প্রতিবেদনের অনুলিপি দেখেছে। সেখানে আরও বলা হয়, ভুল 'সিগনালের' কারণে করমন্ডল এক্সপ্রেস বহানগা বাজার রেলে স্টেশনের কাছে 'লুপ লাইনে' প্রবেশ করে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেই নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

দুর্ঘটনার পর ৪ জ্যেষ্ঠ রেল কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি করেন। তাদের সই করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণে পর আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, করমন্ডল এক্সপ্রেসের উদ্দেশে সিগনাল (দিক নির্দেশনা) দেওয়া হয়েছিল এবং তা প্রত্যাহারও করা হয়। ট্রেনটি লুপ লাইনে প্রবেশ করে এবং সেখানে থাকা মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিয়ে লাইনচ্যুত হয়।'

প্রতিবেদন অনুসারে, রেল নিরাপত্তা কমিশনার দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে বিস্তারিত কারিগরি তদন্ত প্রক্রিয়া চালাবেন। এরপরই প্রকৃত কারণের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

 

Comments