প্লাস্টিক কারখানা যখন জ্বলছিল পাশেই তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল তাদের

চকবাজারের প্লাস্টিক কারখানাটি যখন আগুনে জ্বলছিল, সে সময় ওই কারখানার বিপরীত পাশে একটি গোডাউনে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন ৯ নারী।
গোডাউন
পাশের ভবনে আগুন লাগার পর কর্মীদের ভেতরে রেখে গোডাউনের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে মালিক চলে যান। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

চকবাজারের প্লাস্টিক কারখানাটি যখন আগুনে জ্বলছিল, সে সময় ওই কারখানার বিপরীত পাশে একটি গোডাউনে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন ৯ নারী।

আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে কামালবাগ দেবীদ্বারঘাট এলাকায় ৪ তলা ভবনের প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে।

ওই কারখানার ৫০ গজের মধ্যেই রাস্তার বিপরীতে আবুল কালামের প্লাস্টিকের গোডাউন। আগুন লাগার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত একতলা টিনশেডের ওই গোডাউনে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন গোডাউনের ৯ নারী কর্মী।

তাদের একজন জিঞ্জিরার বাসিন্দা নাসিমা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সকাল ৯টায় এখানে এসে কাজ শুরু করি। ১২টার দিকে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে। তখন মালিক আমাদের গোডাউনের ভেতরে রেখে কলাপসিবল গেট লাগিয়ে তালা দিয়ে চলে যান।'

কলাপসিবল
তালাবদ্ধ গোডাউনের ভেতরে কর্মীরা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

'তবে তিনি বলেছিলেন যে বাইরে কারও কাছে চাবি রেখে গিয়েছেন। যদি আগুন আমাদের এখানে চলে আসত, তখন আমাদের তালা খুলে উদ্ধার করা হতো,' বলেন তিনি।

দুপুর আড়াইটার দিকে প্লাস্টিক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকেও নাসিমাসহ ৯ নারীকে গোডাউনে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

এর কিছুক্ষণ পর আরেক নারী এসে তালা খুলে তাদের বাইরে বের করেন।

মালিক আবুল কালাম তার কাছে গোডাউনের চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই নারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে আগুন লাগলে মালামাল লুটপাট বা চুরির সম্ভাবনা থাকে। তাই মালিক গোডাউন তালা দিয়েছিলেন।'

'তবে তিনি আমার কাছে চাবি দিয়েছিলেন। আমি বাইরেই ছিলাম। আগুন এদিকে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখলে, আমি তালা খুলে তাদের বাইরে বের করতাম,' বলেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গোডাউনের মালিক আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

খোঁজ করা হলে নারী কর্মচারীরা জানান, আবুল কালাম বাইরেই আছেন। কিন্তু বাইরে জটলার মধ্যে তাকে পাওয়া যায়নি।

পরে তার মোবাইল নম্বর চাইলেও ওই কর্মীরা দিতে পারেননি।

বিকেলে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ওই গোডাউনের আশেপাশে থেকেও এই প্রতিবেদক আবুল কালামের দেখা পাননি।

Comments