এখনো বঙ্গবাজারে আগুনের কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস

মঙ্গলবারের আগুনে বঙ্গবাজার মার্কেটের সব দোকান পুড়ে যায়। ছবি: আব্দুল্লাহ আব্বাস/স্টার

রাজধানীর বঙ্গবাজারে গত মঙ্গলবার ভোরে আগুন লাগে। ৭৫ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকালে আগুন নির্বাপণ হয়। কিন্তু আজ রোববার রাত পর্যন্তও এ অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি। এখন পর্যন্ত আগুনের কারণ সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি তারা।

এ বিষয়ে আজ রোববার ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর দীনমনি শর্মা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠি পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেখান থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে এবং আনুষঙ্গিক তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।'

তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো সিদ্ধান্তে আসার মতো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। 

মঙ্গলবার সকালে আগুন লাগার পর বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেটের দোকান পুড়ে যায়। পাশের অ্যানেক্সকো টাওয়ারেও ছড়িয়ে পড়ে আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮ ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক সদস্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেদিন আগুন যখন ৩ তলার ছাদ বেয়ে উঠে যায়, তখনই আগুনের বিষয়টি টের পাওয়া যায়। তার আগে কেউ বুঝতে পারেনি। যখন চাল অতিক্রম করে আগুন ও ধোয়া মহানগর ও আদর্শ মার্কেটের দিকে উঠে আসছিল তখন অ্যানেক্সকো টাওয়ারের লোকজন সেটি দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গেই তারা বঙ্গ কমপ্লেক্সের নিরাপত্তাকর্মীদের জানায়, ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।'

'আমরা তাৎক্ষণিকভাবেই রেসপন্স করেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি ততক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে,' বলেন তিনি। 

দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'এই মার্কেটটি আগে থেকেই ঝুঁকিতে ছিল। তার ওপর ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ কাপড় গোডাউনে রেখেছিলেন। অনেক সুতি ও সিনথেটিক কাপড় ছিল। এগুলো দাহ্য।'

'একে তো সরু রাস্তা তার ওপর উপচে পড়া মালপত্রের কারণে মার্কেটের ভেতরে ঢোকাটাও সহজ ছিল না। এছাড়া মার্কেটের ভেতরে চারদিক বন্ধ হওয়ায় তাপমাত্রা ছিল অনেক বেশি। আগুন যখন নিয়ন্ত্রণে আনার মতো অবস্থায় ছিল তখন কেউ টেরই পায়নি। টের যখন পেয়েছে ততক্ষণে ভেতরে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে,' যোগ করেন তিনি। 

অগ্নিকাণ্ডের পরদিন বুধবার সকালে সিআইডির একটি পরিদর্শক দল ঘটনাস্থলে যায়। তারাও আগুনের কারণ জানাতে পারেনি।

সে রাতে বঙ্গবাজারের তিন তলার ওপরের একটি অংশে অস্থায়ী একটি কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন বঙ্গ কমপ্লেক্সের তিন নিরাপত্তাকর্মী। 

তারা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তখন ডিউটিতে ছিলাম না। যারা ছিল তারা মার্কেটের বাইরে পাহারা দিচ্ছিল। ভেতরের অবস্থা জানার কোনো উপায় তাদের ছিল না। আদর্শ মার্কেট ও মহানগর মার্কেটের মাঝামাঝি থেকে আগুনের শিখা উপরের দিকে উঠে আসে। যখন উপরে আগুনের শিখা, ধোঁয়া দেখে সবাই চারদিক থেকে "আগুন-আগুন" চিৎকার করে। অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র নিয়ে দৌড়ে গেলেও, আগুন দাউদাউ করে জ্বলছিল। তারা কিছু করতে পারেননি।'

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের এত কাছে আগুনের ঘটনা ঘটার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে যে উৎসুক জনতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লেগেছে।

Comments

The Daily Star  | English

US-China tariff war punishes Bangladesh

Bangladesh is one of those nations that face pressure from Washington to decouple their manufacturing industries from Chinese suppliers, according to officials familiar with trade negotiations.

11h ago