নারায়ণগঞ্জে পুলিশের ২ মামলায় আসামি ৬৪ বিএনপি নেতাকর্মী

নাশকতার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬৪ নেতাকর্মীকে আসামি করে ২ থানায় পৃথক ২টি মামলা করেছে পুলিশ৷

নাশকতার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬৪ নেতাকর্মীকে আসামি করে ২ থানায় পৃথক ২টি মামলা করেছে পুলিশ৷

আজ রোববার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সানোয়ার হোসেন ও আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন৷

দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, 'গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নাশকতার প্রস্তুতি নিতে এক নেতার বাসায় গোপন বৈঠক করছেন বলে খবর পাই৷ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা এলাকায় অভিযান চালালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়৷'

ওসি বলেন, 'পালিয়ে যাবার সময় আসামিদের ধরতে গিয়ে ধস্তাধস্তিতে পুলিশের এক সদস্য আহত হন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আত্মরক্ষার্থে ১১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ৷'

পরে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা পুলিশের মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু (৫৫), সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল (৬০), মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব মমতাজ উদ্দিন মন্তু (৫৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি নেতা টিএইচ তোফা (৫১), তৈয়ব আলীসহ (৫১) ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে৷ আসামিরা সবাই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী বলে জানান ওসি৷

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও ৪টি অবিস্ফোরিত ককটেল আলামত হিসেবে জব্দ করেছে। তবে এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি৷

এদিকে রোববার সকালে আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন মিয়া বাদী হয়ে নাশকতার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন৷ বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা ওই মামলাতেও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে৷ মামলায় আড়াইহাজার থানা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী মেম্বার, ছাত্রদলের সভাপতি জুবায়ের রহমান দিপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বাচ্চু মিয়াসহ ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত ৫০-১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার৷

তিনি বলেন, 'শনিবার সন্ধ্যায় মদনপুর আড়াইহাজার সড়কে ছাত্রদল একটি মশাল মিছিল বের করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়৷ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ছাত্রদলের ২জনকে আটক করে৷ এ সময় ৬২টি মশাল উদ্ধার করা হয়৷ পরে তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷'

মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের রাধানগর এলাকার মতিনের ছেলে ছাত্রদল নেতা রতন ও উপজেলার চামুরকান্দী এলাকার মুনছুর আলীর ছেলে মোজাম্মেল৷

এদিকে স্থানীয় ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলায় ছাত্রদলের মশাল মিছিলের প্রস্তুতির সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালায়৷ এ ঘটনায় ছাত্রদলের অন্তত ৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জোবায়ের রহমান জানান, কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিলের প্রস্তুতির সময় উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শরিফুল আলমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৩০-৪০ জনের একটি দল লাঠিসোটা ও দা নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। হামলার পর তারা রতন মিয়া নামে এক ছাত্রদল নেতাকে পিটিয়ে পুলিশে দেয়৷

এর আগে গত ২১ নভেম্বর দিবাগত রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় নাশকতার অভিযোগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে পুলিশ৷ বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা ওই মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩৪ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়৷

Comments