আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে গুলি: গ্রেপ্তার ৫
ফরিদপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলার হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে হাবিব ফকিরকে গুলির ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সালথা উপজেলার রসুলপুর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ৫ জন হলেন- সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরের মো. সোহেল ফকির (২৮), ফরিদপুর শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার শেখ খসরু (৩৬) ও মো. রিপন ওরফে লিমন (২৫) এবং শহরের গুহলীপুর এলাকার শাহীন মোল্লা (৩৭) ও মো. তুষার (৫৩)।
তারা সবাই ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামানের সমর্থক।
পুলিশ জানায়, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান ওরফে তিতাস ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
এই বিরোধের জেরে ২ পক্ষের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। আহত হাবিব ফকির কৃষ্ণপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের সমর্থক। সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি গত মঙ্গলবার সকালে আদালতে এসেছিলেন। হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ইজিবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।
দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে পৌঁছালে কৃষ্ণপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামানের সমর্থক কয়েকজন অস্ত্রধারী ইজি বাইকের গতি রোধ করে হাবিবকে নামিয়ে সড়কের পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে হাবিবের ২ পায়ে গুলি করে। এছাড়া তার বাম পায়ে কুপিয়ে জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটিয়ে আহত করে।
এ ঘটনায় ফরিদপুরের কোতয়ালী ও সালথা থানায় মোট ৩টি মামলা হয়েছে।
বুধবার দুপুর আড়াইটায় এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শেখ মো. আব্দুল্লা বিন কালাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতয়ালী থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে যে পিস্তল দিয়ে হাবিব ফকিরকে গুলি করা হয়েছিল সেই পিস্তল, একটি গুলি, তিনটি ধারাল চাকু ও এক বোতল দেশীয় মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল গফফার, পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিল হোসেন, পরিদর্শক (পুলিশ কন্ট্রোল) সেলিম রেজাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বলেন, 'গতকাল বুধবার বিকেলে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার ৫ জনকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ পরে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।'
আহত হাবিব ফকির বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন। তবে তিনি বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত।
হাবিব ফকির সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের গোলাপ ফকিরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক।
Comments