ইউপি কার্যালয়ে আটকে নির্যাতন: চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছেলে ছাগল চুরি করেছে এমন অভিযোগে খিদিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাউছার রশিদ বিপ্লব তার কার্যালয়ে আঙ্গুর মিয়াকে (৫০) আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে এ মামলা হয়েছে। ১৬ ঘণ্টা পর রাত ২টার দিকে সাদা কাগজে সই রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছেলের বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগে বাবাকে ইউপি কার্যালয়ে নির্যাতনের অভিযোগ
বাবাকে ইউপি কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ছবি: স্টার

নরসিংদীতে ছেলে ছাগল চুরি করেছে এমন অভিযোগে বাবাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে বিচারক শারমিন সুলতানা পিংকি অভিযোগটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেন।

মামলার বাদী ভুক্তভোগীর স্ত্রী রিমা আক্তারের আইনজীবী আল আমিন মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় খিদিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাউছার রশিদ বিপ্লব, একই ইউনিয়নের ৫ নং ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া এবং সাদ্দাম হোসেন (২২), মামুন (২৭), সোহাগ (২৫) এবং ফজলু মিয়ার (৪৫) নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

গত ২৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে ছেলে ছাগল চুরি করেছে এমন অভিযোগে মনোহরদী এলাকার খিদিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাউছার রশিদ বিপ্লব তার কার্যালয়ে আঙ্গুর মিয়াকে (৫০) আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে এ মামলা হয়েছে। ১৬ ঘণ্টা পর রাত ২টার দিকে সাদা কাগজে সই রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরে আহত অবস্থায় আঙ্গুর মিয়া মনোহরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আঙ্গুর মিয়াকে চেয়ারম্যানের ১০-১৫ লোক মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে ধরে সিএনজিতে তুলে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। তাকে সারাদিন আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে চেয়ারম্যান ১ লাখ টাকাও দাবি করেন।

মামলার বাদী আরও বলেন, 'রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে আমার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তারা আমার অনুরোধ রাখেননি। উল্টো আমার কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন। এই রোজা-রমজানের দিনে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্নও আছে।'

জানতে চাইলে অভিযুক্ত, স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, 'চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। আমি জিম্মি হয়ে সেদিন আঙ্গুর মিয়াকে ছাড়িয়ে এনেছিলাম। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করায় সকালে তাকে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।'

এ বিষয়ে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, 'খিদিরপুরে ছেলের ছাগল চুরির অভিযোগে পিতা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনায় মামলার কাগজপত্র আমাদের হাতে পৌছালে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments