শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: সাবেক এমপি হাবিবসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ছবি: স্টার

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ২টি মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়েছে। 

২ মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন ও অন্য ৪৪ জন আসামিকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।  

আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ রায় ঘোষণা করেন।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্তি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফাইমুল হক জানান, কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে মামলার ঘটনায় ৩টি মামলার মধ্যে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ২টি মামলার ৪৮ জন আসামির মধ্যে আদালত আজ সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, উপজেলা যুবদলের সভাপতি কাদের বাচ্চু, কলারোয়া পৌর যুবদলের সভাপতি আরিফুর রহমান রঞ্জু ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি রিপনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে। বাকি ৪৪ জন আসামির প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। 

তিনি জানান, আজ কারাগারে থাকা ৩৭ জন আসামির মধ্যে হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জন আদালতে হাজির ছিলেন। অসুস্থতার কারণে ৩ জন কারাগারে থাকার পরও আদালতে আসতে পারেননি। এ ছাড়া জামিনে থাকা ২ আসামির মধ্যে আইনজীবী আব্দুস ছাত্তার আদালতে হাজির থাকলেও আইনজীবী আব্দুস সামাদ আদালতে হাজির ছিলেন না। এ ছাড়া ৯ জন আসামি প্রথম থেকেই পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া ২ জন আসামি কারাগারে মারা গেছেন।  

ফাইমুল হক আরও জানান, কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে মামলায় ঘটনায় ৩টি মামলার একটিতে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় আদালত। মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ নেতাকর্মীকে ৪ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম হুমায়ুন কবির।  

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদী গ্রামের একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপর দাঁড় করিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জুর নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালান। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল হক রাসেল, রমনা এলাকার যুব মহিলা লীগের নেত্রী ফতেমা জামান সাথী, আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুল মতিনসহ ১২ জন নেতা-কর্মী আহত হন। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে আশ্রয় নিলেও তাদের পিটিয়ে জখম করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় তাদের ক্যামেরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মুঠোফোন, ঘড়ি ও টাকা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরের ঢাকা মেট্রো-গ-১২-৫৩৪২ পাজেরো গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। 

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ জানান, ২০২২ সালের  ১৪ জুন অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অপর দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় সাফাই সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন  শেষ হয় ১২ এপ্রিল। 

আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মুজিদ বলেন, তারা এ রায়ে খুশি হতে পারেননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। 
                                                       

 

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

9h ago