চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ওসিকে উপমন্ত্রীর বডিগার্ডের ধাক্কা, থানায় জিডি

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবিরকে ধাক্কা মেরে আহত করার অভিযোগে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বডিগার্ডের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবিরকে ধাক্কা মেরে আহত করার অভিযোগে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বডিগার্ডের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করা হয়েছে।

অভিযুক্ত বডিগার্ড সন্তু শীল সিএমপির উপসহকারী পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা এলাকায় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ইদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উপমন্ত্রীর সামনেই এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রগুলো জানায়, কাল রাতে থেকেই সিএমপি কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনায় ছিল ঘটনাটি।

পরে ওসি জাহিদুল কবির নিজে থানায় জিডি ও নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ইদ সামগ্রী বিতরণে পাথরঘাটার ফিরিঙ্গীবাজার এলাকায় যান চট্টগ্রাম- ৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ সময় তাকে প্রটোকল হিসেবে পাশে থেকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওসি জাহিদুল। এ সময় পেছেন থেকে বাম হাতের কনুই দিয়ে ওসিকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন এএসআই সন্তু। সঙ্গে সঙ্গেই ওসি দাঁড়িয়ে গিয়ে উপমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় মন্ত্রীর বডিগার্ড ও ওসি তর্কে জড়ালে তাদের রুমের ভেতরে নিয়ে যান নওফেল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপমন্ত্রীর বডিগার্ড ওসিকে কনুই দিয়ে ধাক্কা দিলে সেখানেই প্রতিবাদ করেন ওসি। পরে তাদেরকে সবার সামনে থেকে নিয়ে রুমের ভেতরে চলে যান নওফেল।'

'পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোনে জানান ওসি,' বলেন তিনি।

সিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) আব্দুল ওয়ারিশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি আমরা দেখছি।'

তিনি বলেন, 'অভিযুক্ত সন্তু উপমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বডিগার্ড হিসেবে আছেন। ইদের পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।'

সিএমপি সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সন্তু গত চার বছর ধরে বডিগার্ড হিসেবে নওফেলের সঙ্গে আছেন। সন্তুর বিরুদ্ধে উপমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে তদবীর বাণিজ্য ও নানা অপকর্মের অভিযোগ এসেছে দক্ষিণ জোনের কর্মকর্তাদের কাছে।

এ বিষয়ে জানতে নওফেলকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা জানিয়ে ওসি জাহিদুল কবির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার যা বলার আমি কমিশনার স্যারকে বলেছি। আমি কথা বলতে ইচ্ছুক নই।'

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় আজ শুক্রবার বিকেলে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নেব। ওসিকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments