‘পক্ষপাতমূলক আচরণে’ চট্টগ্রামের ডিসিকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে ভোটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
দলীয় নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয় চেয়ে মোনাজাত করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে ভোটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা এ তথ্য জানান।

পরবর্তীতে তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ডিসির 'পক্ষপাতমূলক আচরণে'র জন্য তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান কমিশনার রাশেদা সুলতানা।

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান নিজ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন আবারও ক্ষমতায় আসেন, সে জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। এ জন্য বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দোয়া করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ছাড়া, তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয় চেয়েও মোনাজাত করেন।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, 'মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগির আপনারা জানতে পারবেন। ওনাকে আমরা রাখবো না। সরিয়ে দেবো।'

তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'এজন্য তদন্ত হতে হবে। এটা লঘু শাস্তি নয়। এই মূহুর্তে করণীয় একটাই, তাকে সরিয়ে দেওয়া। পরবর্তীতে পরেরটা দেখা যাবে। এখন কাজ হলো তাকে সরিয়ে দিয়ে উপযুক্ত অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়া।'

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, 'বিদ্রোহী যারা আসছে তারা একই দলের। দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদ নির্বাচন নেই। তারপর প্রশাসক এসেছে। এই অবস্থায় তো চলা যায় না। প্রশাসক আর নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যে কিন্তু অনেক পার্থক্য। মন্ত্রণালয় থেকে বলার পর আমরা নির্বাচন দিলাম। আমাদের কাজ নির্বাচন সম্পন্ন করা।'

তিনি আরও বলেন, 'একজন দাঁড়াচ্ছে, আরেকজন দাঁড়াচ্ছেন না। কাজেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াটা বেআইনি নয়। আবার নির্বাচন কেউ অংশ নিতে পারবে না, এমন অবস্থাও তৈরি হয়নি। আমরা চাই, সবাই নির্বাচনে আসুক। কিন্তু কেউ যদি না আসে, কীভাবে তাদের আনবো।'

'দেশে অনেক ঘটনাই ঘটছে, যা কারোই আকাঙ্ক্ষিত নয়। ছোটবেলায় আমরা দেখেছি স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ছিল না। কিন্তু অলিখিতভাবে অনেক কিছু হয়ে যায়। এটা বন্ধ করা রাজনৈতিক দলগুলোরই কাজ। এটা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়। কোথাও কোনো অনিয়ম হলে এখন আমরা নির্দ্বিধায় সিদ্ধান্ত নেব। আওয়ামী লীগ, বিএনপি—এগুলো কিন্তু আমরা আমলে নেব না। ইতোপূর্বেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি', যোগ করেন তিনি।

Comments