উপনির্বাচনের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা, দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনের উপ-নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। গণ-সংযোগে প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটের দিন যতো এগিয়ে আসছে, প্রচারণা ততই বাড়ছে। শহর এলাকায় প্রচারণা তুঙ্গে থাকলেও গ্রামাঞ্চলে ভোটের আমেজ তুলনামূলক কম।
গত কয়েকদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের অনেক এলাকায় এখনো পোস্টার লাগেনি। প্রার্থীরাও যাননি ওইসব এলাকায়।
সদর উপজেলার ঘুঘুডিমা-স্লুইসগেট এলাকায় এক চায়ের দোকানে কথা হয় আলমগীর হোসেন, শাহাজাদ হোসেন, ওবাইদুল্লাহসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে। তারা সবাই পেশায় কৃষক। তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গ্রামের মানুষের ভোট নিয়ে আগ্রহ কম। তারা বুঝেই উঠতে পারেননি উপ-নির্বাচন কী বা কেন হচ্ছে?
শাহাজাদ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েকদিন আগে মেইন রোডে ভোটের মাইকিং শুনে অবাক হয়েছিলাম। প্রশ্ন জেগেছিল এটা আবার কিসের ভোট। পরে শুনেছি আগের এমপি পদত্যাগ করায় আবার ভোট হচ্ছে।'
আলমগীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগ্রহ কম হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা কম হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।'
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগর মহল্লার চা-দোকানদার জিয়াউর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভোটের আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। আস্তে আস্তে প্রচারণা জমে উঠছে।
তবে ভিন্নচিত্র শহর বা উপজেলা সদর এলাকায়।'
'নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলা নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন। এসব উপজেলা সদরে পাড়া-মহল্লায় পোস্টারে ছেয়ে গেছে। একই অবস্থা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ বা সদর উপজেলার। সেখানে শহর এলাকা ও বড় বাজারে প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোট চাচ্ছেন। তারা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।'
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নবম ও দশম জাতীয় সংসদে আমি পরীক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য সংসদ সদস্য ছিলাম। ওই ২ মেয়াদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন কয়েছি।'
'একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এবার নির্বাচিত হলে আমার আমলের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো শেষ করবো।'
স্বতন্ত্রপ্রার্থী সামিউল হক লিটন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নির্বাচিত হলে যথাসাধ্য উন্নয়ন করবো। একাদশ সংসদের মেয়াদ আর মাত্র ১১ মাস। ইচ্ছা থাকলেও এই সময়ের মধ্যে অনেক কিছুই করা সম্ভব নয়। তবে যতটুকু করা যায় উন্নয়ন করবো।'
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংসদ সদস্য না হয়েই আমি এলাকার মানুষের পাশে আছি। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আরও বেশি পাশে থাকার সুযোগ হবে।'
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। তাদের দাবি বিচ্ছিন্ন ২/১টি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান জানান, এবার সবগুলো কেন্দ্রেই ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অপ্রীতিকর ঘটনাই ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫০ জন। এই আসনে কেন্দ্র ১৮০টি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজার ৪৯৫ জন। এই আসনে কেন্দ্র ১৭২টি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ আসনে ৯ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তারা হলেন—চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুহা. জিয়াউর রহমান, জাতীয় পার্টির আব্দুর রাজ্জাক, জাকের পার্টির গোলাম মোস্তফা, বিএনএফের নাবীউল ইসলাম এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী খুরশিদ আলম ও মোহাম্মদ আলী সরকার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদ, বিএনএফের কামরুজ্জামান খান ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী সামিউল হক লিটন।
Comments