১০ বছরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নগদ টাকা বেড়েছে ২১৮ গুণ

আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্টার ফাইল ছবি

দশ বছরের ব্যবধানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হকের নগদ টাকা বেড়েছে ২১৮ গুণ। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি তার কাছে ৫ লাখ টাকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, তার কাছে নগদ আছে ১০ কোটি ৯২ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৯ টাকা, যা ১০ বছর আগের তুলনায় ২১৮ গুণ বেশি। পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমানও ১০ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৭ টাকা। 

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে প্রার্থিতা করবেন কসবা উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই বারের সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এজন্য নির্বাচন কমিশনে তিনি হলফনামা জমা দিয়েছেন।

হলফনামা থেকে জানা যায়, আনিসুল হকের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত ও তালিকাভূক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার হিসেবে তিনি সিটিজেন ব্যাংক ও এক্সিম বাংলাদেশের শেয়ার মূল্য উল্লেখ করেছেন ৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার নিজ নামে কোনো শেয়ার নেই উল্লেখ করেছিলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমাকৃত অর্থের পরিমান ৬ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৭ টাকা। পাঁচ বছর আগে যা ছিল ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৯২ টাকা এবং ১০ বছর আগে ছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। 

আনিসুল হকের কাছে নগদ ইউএস ডলার আছে ১৪ হাজার ৯৩ দশমিক ৫৮ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে তার বিনিয়োগ রয়েছে ৫ কোটি ৭৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৮ টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় এই খাতে তার কোনো বিনিয়োগ ছিল না এবং একাদশে ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ ছিল বলে উল্লেখ করেন।

আইনমন্ত্রীর নিজ নামে চারটি গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল রয়েছে, যার মূল্য ৫ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে আনিসুল হকের স্বর্ণালংকার বাড়েনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার কাছে ২০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে উল্লেখ করেছিলেন, এখনো সেটিই আছে বলে হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও তার একটি টেলিভিশন, ৫০ হাজার টাকা মূল্যের খাট, চেয়ার ও ড্রেসিং টেবিল এবং ৭.৬৫ বোরের একটি পিস্তল রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

হলফনামায় নিজেকে সিনিয়র আইনজীবী ও মন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন আনিসুল হক। ১০ বছর আগে কৃষি খাত (মৎস্য) থেকে আনিসুল হকের বার্ষিক কোনো আয় ছিল না। তবে গত পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় এই খাতে তার বার্ষিক আয় ৩ কোটি টাকার বেশি দেখিয়েছিলেন। এবছর এই খাতে আয় দেখিয়েছেন ৪৩ লাখ টাকা। তার আয়ের বড় অংশ আসে ব্যাংক ও এফডিআর-এর সুদ এবং কৃষি ও মৎস্য খাত থেকে। এই দুটি খাত থেকে তার বাৎসরিক আয় হয় ৮৬ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৮ টাকা।

১০ বছর আগে আনিসুল হকের নামে কোনো সঞ্চয়পত্র, মৎস্য খামার, অকৃষি জমি ও স্বর্ণ ছিল না। বর্তমানে তার প্রয়াত মাতার নামে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ টাকার সঞ্চয়পত্র, তিনটি পৈত্রিক মৎস্য খামার, ৩২ লাখ টাকার অকৃষি জমি ও ২০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। তবে তার ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয় নেই বলে তিনটি হলফনামাতেই উল্লেখ রয়েছে।

আনিসুল হকের স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ৮ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে, যার মূল্য ১৬ লাখ টাকা। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায়ও একই পরিমান কৃষি জমির কথা উল্লেখ করেন তিনি। রাজধানীর পূর্বাচলে তার একটি প্লট রয়েছে, যার মূল্য ২৫ লাখ ৫১ হাজার ৮৫৮ টাকা। এছাড়া বনানীতে একটি বাড়ি, যার মূল্য ৪৫ লাখ টাকা এবং দুটি ফ্ল্যাট যার মূল্য ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

হলফনামা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিগত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নগদ টাকা ও অস্থাবর বেশিরভাগ সম্পদই ছিল আমার মায়ের নামে। এখন আমার মা প্রয়াত হওয়ায় এবং আমার আর কোনো ওয়ারিশ না থাকায় উত্তরাধিকার সূত্রে আমার নগদ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago