পটুয়াখালী-২

আ স ম ফিরোজের ১৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে ৯ গুণ, স্ত্রীর বেড়েছে ৪৬ গুণ

পটুয়াখালী-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ স ম ফিরোজ। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-২ আসনের সাত বারের নির্বাচিত এমপি অসম ফিরোজের বার্ষিক আয় দেড় কোটি টাকারও বেশি। বেড়েছে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণও। পাশাপাশি তার স্ত্রীরও আয় ও সম্পদ দুটোই বেড়েছে। তিনি পেশায় একজন গৃহিণী।

নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর দাখিল করা হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় উল্লেখ করেন ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তখন আয়ের উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট দোকানসহ অন্যান্য ভাড়া। ওই সময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। তার ব্যাংক ঋণ ছিল ১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তখন তার স্ত্রীর কোনো আয় না থাকলেও তার ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণ এবং ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক্স মালামালসহ অস্থাবর-স্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর দাখিল করা হলফনামায় ১৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বার্ষিক আয় উল্লেখ করা হলেও তার অস্থাবর-স্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাড়ায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওই সময় তার ব্যাংক ঋণ ছিল ২ কোটি ২২ লাখ টাকা। ওই পাঁচ বছরে এমপিপত্নীর নগদ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

তবে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হফলনামায় আ স ম ও ফিরোজের বার্ষিক আয় এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। বার্ষিক আয়ে সঙ্গে তার অস্থাবর-স্থাবর সম্পদের পরিমাণও বেড়ে হয় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নগদ ২১ লাখ ৩২ হাজার ৯৬৯ টাকাসহ অস্থাবর-স্থাবর সম্পদ দ্বিগুণ বেড়ে হয় ৮৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এর মধ্যে রয়েছে ফ্লাট-বাড়িও।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় দেখা যায় তার বার্ষিক আয় বেড়ে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সম্পদ ৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ব্যাংক ঋণ দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। তাও আবার স্থায়ী আমানতের বিপরীতে। তার স্থায়ী আমানত বা এফডিআরের পরিমাণ ২ কোটি টাকা এবং স্ত্রীর নামে এফডিআর আছে ৪০ লাখ টাকার। স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত নয় এমন একটি কোম্পানির ১৪ লাখ ১১ হাজার টাকার ও ফাতেমা হেলথ টেকনোলজি অ্যান্ড ইনস্টিটিউট ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে আ স ম ফিরোজের। তার পত্নীও পিছিয়ে নেই বিনিয়োগে। তিনিও ফাতেমা হেলথ টেকনোলজি অ্যান্ড ইনস্টিটিউটে ৪৯ লাখ টাকা ও পায়রা পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার ফ্লাট-বাড়ি ছাড়াও ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গাড়িও আছে।

সাবেক চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজের ২০০৮ সালে বার্ষিক আয় ছিল ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা আর এখন বার্ষিক আয় ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। তখন তার ১ কোটি ৯ লাখ টাকার অস্থাবর-স্থাবর সম্পদ থাকলেও এখন এর পরিমাণ ৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

২০০৮ সালে ফিরোজ পত্নীর কাছে কোনো নগদ টাকা না থাকলেও এ বছর তার কাছে নগদ ও ব্যাংক রয়েছে ২৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এই সময় আর অস্থাবর-স্থাবর সম্পত্তি ছিল মাত্র ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকার। সেখান থেকে এখন এমপিপত্নীর ১২ তোলা স্বর্ণ এবং ফ্লাট বাড়ি, গাড়ি, কোম্পানির শেয়ার, স্থায়ী আমানতসহ মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ১৫ বছরে ফিরোজের সহধর্মিণীর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৪৬ গুণ।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago