প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী, ‘চট্টগ্রামের ৩টি আসনে কঠিন লড়াইয়ের মুখে আ. লীগ প্রার্থীরা’

আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন (বাম থেকে) গিয়াস উদ্দিন, এম এ মোতালেব ও আবদুচ সালাম। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনে আপিল করে চট্টগ্রামের তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে ত্রুটি পাওয়ায় চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই), চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) ও চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা গিয়াস উদ্দিন, এম এ মোতালেব ও আবদুচ সালামের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

গিয়াস উদ্দিন মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। এমএ মোতালেব সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। আবদুচ সালাম চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান।

এই তিন নেতা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এই তিনজনই শক্তিশালী প্রার্থী। তারা প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় এসব আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সহজে জয় পাওয়া কঠিন হবে।

চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুব রহমান রুহেল দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

রুহেল রাজনীতিতে নতুন হলেও তার বাবা এ আসন থেকে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় তার পরিবারের একটি শক্তিশালী ভোটব্যাংক  রয়েছে।

অন্যদিকে রাজনীতিতে গিয়াসের দীর্ঘ ক্যারিয়ার রয়েছে। সত্তরের দশকে রাজনীতি শুরু করা গিয়াস কালক্রমে স্থানীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা হয়ে উঠেছেন। তিনি মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

সূত্র জানায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মী নির্বাচনে গিয়াসের পক্ষে কাজ করবেন।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় রাজনীতিতে গিয়াসের শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'মিরসরাইয়ের ভোটারদের কাছে গিয়াস উদ্দিনের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি একজন জনপন্থী নেতা।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে অনুষ্ঠিত হলে গিয়াস উদ্দিনের বড় ব্যবধানে জয়ী হওয়ার ভালো সুযোগ রয়েছে। কারণ, তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী রাজনীতিতে নতুন মুখ।'

মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির বলেন, 'নৌকার প্রার্থী রুহেলের জয়ের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। নৌকা প্রতীকের ভোটব্যাংক রুহেলের কাছেই থাকবে।'

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের টিকিটে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য, মোতালেব স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় নদভী ও মোতালেবের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির রাসেল বলেন, 'মোতালেব ও নদভী দুজনই ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের মাঠে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে।'

চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদকে। এই আসনেই আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ সালাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে সালাম নগরীতে বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করেন। তিনি চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। ফলে এলাকার ভোটারদের মধ্যে তার পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা রয়েছে।

গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে নোমান জয়ী হন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উভয় প্রার্থীই দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়।

চান্দগাঁওয়ের স্থানীয় অধিবাসী আমীর হোসেন বলেন, 'নোমান ভাই অত্যন্ত সজ্জন মানুষ এবং একেবারে মাঠ পর্যায় থেকে উঠে আসা নেতা। অন্যদিকে সালাম ভাইও অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে এলাকার মানুষের কাছে সুপরিচিত। আমরা ধারণা করছি, এই আসনে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Bridge this year, full benefits not before 2030

The Bangabandhu Railway Bridge over the Jamuna is set to be inaugurated next month, but people will not get the full benefit of it until at least 2030.

7h ago