‘শিল্প ধ্বংসের দোহাই দিয়ে মানুষ ধ্বংস করা যাবে না’

নির্মলেন্দু গুণ

'চা-শ্রমিকদের দৈনিক বেতন ৩০০ টাকা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। আমাকে পথে নামতে বাধ্য করবেন না। ভালো হবে না।'

আজ সোমবার সকালে নিজের ফেসবুক পেজে চা-শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দাবির পক্ষে এমনটিই লিখেছেন বাংলা ভাষার প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণ।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, 'চা-শ্রমিকদের এত কম টাকা মজুরি দেওয়া হয়, এটা তো খুবই অস্বাভাবিক, আপত্তিজনক। একজন মানুষ সারাদিন কাজ করে পাবেন মাত্র ১২০ টাকা। এটা কোনোভাবেই হতে পারে না, মেনে নেওয়া যায় না। তাদের দৈনিক মজুরি কমপক্ষে ৩০০ টাকা দিতে হবে।'

চা-শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে তিনি আগেও সহমত প্রকাশ করেছেন এবং এখনো করছেন জানিয়ে নির্মলেন্দু গুণ আরও বলেন, 'দেশে কোনো খাতের শ্রমিকের মজুরিই দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকার নিচে না। গ্রামেগঞ্জেরও যদি দেখেন, সেখানেও দিন মজুররা সারাদিন কাজ করে ৪০০-৫০০ টাকার নিচে পান না।'

চা বাগানের মালিকরা দাবি করেন চা-শ্রমিকদের মজুরি যদি ৩০০ টাকা করা হয়, তাহলে চা শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। এ বিষয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, 'মানুষের রক্ত শোষণ করে তো শিল্প টিকিয়ে রাখার দরকার নেই। বহুবছর ধরে আমরা শুনছি পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হলে পোশাক শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। কম হলেও এই খাতে বেতন কিছু বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু পোশাক শিল্প ধ্বংস হয়ে যায়নি। দিন দিন তাদের অবস্থা ভালো হয়েছে। সব বড়লোকদের বক্তব্য একই রকম, গরিব-বিরোধী। মজুরি বাড়ালে সর্বোচ্চ যেটা হতে পারে সেটা হলো, মালিকদের লাভ একটু কমতে পারে। চা শিল্পের মালিকরা শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করলে তাদের লাভের পরিমাণ একটু কমলেও শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে, এটা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য না। সবচেয়ে বড় কথা, শিল্প ধ্বংসের দোহাই দিয়ে মানুষ ধ্বংস করা যাবে না।'

'সুতরাং চা-শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো টালবাহানা না করে অবিলম্বে তাদের মজুরি ৩০০ টাকা করা হোক,' যোগ করেন তিনি।

শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে গত ৯ আগস্ট থেকে ২ ঘণ্টা করে ধর্মঘট শুরু করেন চা-শ্রমিকরা

এরপর ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস ধর্মঘট শুরু হয়। ১৪ আগস্ট রোববার চা বাগানের সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধর্মঘট স্থগিত ছিল। ১৬ আগস্ট থেকে আবার ধর্মঘট চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

6h ago