রাস্তা বন্দোবস্ত দেওয়ার অভিযোগ সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে

চলাচলের রাস্তাটি খাস জমির উপর। কিন্তু এই খাস জমিটি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। ছবি। এস দিলীপ রায়/ স্টার

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের নবীনগর পুটিমারী গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে নাওহাটা, জমগ্রাম, ডাঙ্গাটারী, খেলপাড়গা ও পুটিমারী গ্রামের কয়েকশ মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। রাস্তাটি ১০ শতাংশ খাস জমির উপর আছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

পানি নিষ্কাশনের জন্য রাস্তাটিতে একটি কালভার্ট আছে। গ্রামবাসিরা হঠাৎ জানতে পারেন ১০ শতাংশ খাস জমি স্থানীয় ইব্রাহিম আলী ও তার স্ত্রী আলীমা বেগমকে কবুলিয়ত মুলে ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।

গ্রামবাসির অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষের বিনিময়ে পাটগ্রাম উপজেলার সার্ভেয়ার রুবেল রানা ও বাউড়া ইউনিয়নের সাবেক তহসিলদার মোহাম্মাদুল ইসলাম এই খাস জমির বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করেই এই কাজটি করেছেন। বন্দোবস্ত গ্রহণকারীদের জমি বুঝে দিতে সার্ভেয়ার রাস্তা হিসেবে ঝুনু চন্দ্র দাস নামে এক কৃষকের ভোগদখলীয় জমিকে খাস জমি হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। খাস জমিটি ১৭ মাস আগে বন্দোবস্ত দেওয়া হলেও বিষয়টি এতদিন গোপন ছিল। 

বাউড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্র জানায়, এক দাগে ৭৭ শতাংশ জমি আছে। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ জমির মালিক ঝুনু চন্দ্র দাস। তিনি এই জমির নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করছেন। বাকি ১০ শতাংশ জমি খাস। তবে ১৯৯০ সালের ভূমি জরিপ রেকর্ডে এই খাস জমিতে রাস্তার উল্লেখ নেই।

স্থানীয় পুন্য চন্দ্র রায় (৭৮) ডেইলি স্টারকে জানান, গেল ৫০ বছর থেকে তারা এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন। আগে রাস্তাটি সরু ছিল। পরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাস্তাটি প্রশস্ত করে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। রাস্তাটি খাস জমির উপর। এই খাস জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়ায় তারা হ্মুদ্ধ।

কৃষক ঝুনু চন্দ্র দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ৬৭ শতাংশ জমির মালিক এবং তা ভোগ করে আসছি। সার্ভেয়ার খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়েছেন। মাঠে খাস জমিতে রাস্তা আছে। এখন আমার ভোগ দখলীয় জমি খাস বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন।'

তবে খাস জমি বন্দোবস্ত গ্রহণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

বাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মামুন হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, রাস্তাটি খাস জমির উপর আছে। খাস জমির বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য তিনি সার্ভেয়ারকে বলেছেন।

অভিযুক্ত বাউড়া ইউনিয়নের সাবেক তহসিলদার (বর্তমানে কাকিনা ইউনিয়নে কর্মরত) মোহাম্মাদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সার্ভেয়ার নিজেই করেছেন। এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি।

ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার বরে অভিযুক্ত পাটগ্রাম উপজেলার ভূমি সার্ভেয়ার রুবেল রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৫ মার্চ ১০ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। জনগণের চলাচলের রাস্তাটি ব্যক্তি মালিকানা জমির উপর।'

ম্যাপে খাস জমিটির দিক উল্লেখ করা আছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেননি। জমিটি বন্দোবস্ত দেওয়ার আগে মাঠ পরিদর্শন করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

18m ago