ফেসবুক থেকে: ইডেন কলেজ অধ্যক্ষের কাউন্সেলিং প্রয়োজন
সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, চাপ দিয়ে অনৈতিক কাজ করানো, শিক্ষার্থী নিপীড়নের অভিযোগ ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে। গত রোববার এসব ঘটনায় ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
ইডেন কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টার কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলে।
'মেয়েদের ভুল' এবং 'কাউন্সেলিংয়ে' সমাধান দেখছেন ইডেন অধ্যক্ষ শিরোনামে সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদে দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে ৬ হাজারের বেশি রিঅ্যাকশন, দেড় হাজারের বেশি কমেন্ট ও প্রায় ২০০ শেয়ার হয়েছে।
অধিকাংশ পাঠকই মনে করেন, শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের আগে অধ্যক্ষের কাউন্সেলিং প্রয়োজন। ইডেন কলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য অনেক পাঠক অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে দায়ী করে তার পদত্যাগ চেয়েছেন।
পাঠকের কিছু মন্তব্য—
মোশাররফ ভুঁইয়া জানতে চান, 'অধ্যক্ষ কি এতদিন ঘুমে ছিলেন?'
শরীফ ওবাইদউল্লাহর মন্তব্য, 'ভুল না বলে উনি যদি অন্যায় বলতেন, তাহলে মেনে নিতাম উনি এসব অপকর্মকারীদের সঙ্গে নেই। ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে উনার পদত্যাগ করা উচিত। তারপর তদন্ত করা উচিত উনার সম্পৃক্ততা নিয়ে।'
টুটুল বিশ্বাস লিখেছেন, 'কাউন্সেলিং ছাড়া তিনি সমাধান দেখছেন না। তার মানে উনার কাছে বিকল্প সমাধানের ক্ষমতা নাই। উনি চরম ব্যর্থ। দায়িত্ব ছেড়ে দিলেই পারে। এভাবে আর কত শিক্ষাঙ্গন নষ্ট হবে।'
জামান রাশেদ মনে করেন, 'ছাত্রলীগ যা কিছু করে সবকিছুর প্রশ্রয় দিয়ে উনি নিজেও এসবের অংশীদার। অতএব এর দায় উনারও।'
রাশেদ বি এ খানের ভাষ্য, 'দেশে ছাত্র রাজনীতি এবং সুশিক্ষা বিষয়ের উপর দেশব্যাপী ফ্রি কাউন্সেলিং কোর্স চালু করা উচিত সরকারের। বাজেট ১ হাজার কোটি টাকা মাত্র।'
আবদুর রাজ্জাক আকন্দ লিখেছেন, 'সরকারি কলেজের অনেক অধ্যক্ষই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ সবাই হয়ত দলীয় রাজনীতির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে এবং শিক্ষার মানেরও অবনতির অন্যতম কারণ মনে হয়!'
রবিন আহমেদ মনে করেন, 'আগে শিক্ষকদের কাউন্সেলিং করা দরকার, কীভাবে সঠিক পথে প্রতিষ্ঠান চালাতে হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মাথা নত না করা লাগে।'
মোবারক আলীর মন্তব্য, 'যারা ছাত্রীদের অপরাজনীতিতে ব্যবহার করছে তাদের কাউন্সেলিং দরকার।'
মোহাম্মদ রাফিউল সাইফের মন্তব্য, 'প্রশ্ন কী আর উত্তর কী। কখন কাউন্সেলিং করতে হয়, আর কখন শাসন করতে হয় তাই জানে না।'
রেজাউল হক টুকু লিখেছেন, 'একটি পক্ষকে সমর্থনের মাধ্যমে উস্কে দিয়ে যত কাউন্সেলিং করেন না কেন, কোনো কাজ হবে না। কাউন্সেলিং দরকার দলের নীতিনির্ধারকদের এবং কাউন্সেলিং দরকার আপনাদের মতো তেলবাজদের।'
ফয়সাল চৌধুরীর ভাষ্য, 'কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলগুলোতে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের নামে চাঁদাবাজ, গুণ্ডা আর মাদক ব্যবসায়ী পুষতেছে। আর ছাত্রী হলগুলোতে কমিটি দিয়ে যাবতীয় অনৈতিক অপকর্ম করাচ্ছে। সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি এভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয়, জাতি অনাদিকাল পঙ্গু হয়ে থাকবে। এরচেয়ে জঘন্য রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ আর কি হতে পারে! সুতরাং, যারা বা যেসব রাজনৈতিক নেতারা এসব নষ্ট রাজনীতির মূল পৃষ্ঠপোষক তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় না আনলে দেশের অস্তিত্ব এবং নিরাপত্তা বিরাট সংকটে পড়বে।'
বেলাল আহমেদ বেলাল মনে করেন, 'লেখাপড়ার দিক দিয়ে ইডেন কলেজের সুখ্যাতি রয়েছে। বর্তমান অবস্থা দেখে শুধু অভিভাবক নয়, সারা দেশবাসী উদ্বিগ্ন। চাপ প্রয়োগে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা, এটি গুরুতর অপরাধ। এমন কাজে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। এই কলেজের অধ্যক্ষের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। সবকিছু জেনে শুনে না শোনার ভান করছেন। কোনো প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দেননি। অধ্যক্ষ হিসেবে এই কলেজের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।'
হেলাল মৃধা লিখেছেন, 'তিনি কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির মতন কথা বলেন না। তিনি ওই পদে থাকার কোনো যোগ্যতা রাখেন না।'
রায়হান মিলনের মতে, 'উনারা এমনিতেই নিজেদেরকে অনেক বড় মনে করেন। তাই তাদের ব্যক্তিত্বের সমস্যার জন্য কাউন্সেলিং নেবে বলে মনে হয় না। তবে এখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায় আছে। নিজেদের দায় এড়াতে এখানে কাউন্সেলিং শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে।'
ফয়সাল মনিম মনে করেন, 'কাউন্সেলিং করে ছাত্রলীগ ঠিক করা যায়, এমন কাউন্সেলিং দুনিয়াতে নাই।'
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন লিখেছেন, 'আলাদা করে ইডেন কলেজে নাকি একজন অধ্যক্ষও আছেন। এটা শুনে খুবই বিস্মিত হলাম!'
বাবু মোহাম্মদের ভাষ্য, 'প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তিনি কোনো মতেই দায় এড়াতে পারেন না। উনার বক্তব্যেই স্পষ্ট, উনি প্রশাসনিকভাবে কতটা অদক্ষ আর অন্যায়ের পৃষ্ঠপোষক।'
আবদুল মতিন লিখেছেন, 'এগুলো পরিকল্পিতভাবে এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার আলামত! যাচাই করে দেখুন, প্রতিটি কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ জাতীয় পদলেহী, ব্যক্তিত্বহীন, তথাকথিত শিক্ষক এবং শিক্ষিকা এবং বিশেষ এক গোষ্ঠী বড় বড় পদ, যেমন অধ্যক্ষ, প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ভিসি ইত্যাদি পদ, দখল করে আছেন!'
এবি জলিলের মন্তব্য, 'কাউন্সেলিং মানে? যাদের নিজেদের স্বভাব চরিত্র ঠিক নাই, যারা নিজেরা বখাটে, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত, তারাই কিনা কাউন্সেলিংয়ের কথা বলে! নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটিয়ে এখন বলে, কাউন্সেলিং করতে হবে!'
সালেহ আহমেদ বলেছেন, 'মনে হয় ক্ষমতার চাপে উনার চিড়ে চ্যাপটা অবস্থা।'
মো. জাহাঙ্গীর লিখেছেন, 'শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরণের ন্যক্কারজনক মারামারির পর কীভাবে অধ্যক্ষ বলেন মেয়েদের এটা ভুল? অন্যান্য অভিযোগর বিষয়ে নাই বা বললাম।'
সিরাজুল ইসলাম দুলালের মন্তব্য, 'তার মানে যারা এই কাজে বাধ্য করতো তাদের কোনো বিচার হবে না? আহা কি সর্বনাশ!'
মোহাম্মদ ইকবাল মনে করেন, 'হয়তো উনি খুবই সৎ অধ্যক্ষ, কিন্তু প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধরদের কাছে তিনি অসহায় ছিলেন।'
সাইফুল সাইফ লিখেছেন, 'এমনি এমনি তো আর আপনাকে অধ্যক্ষ বানানো হয় নাই। সময় মত এভাবে কর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং যোগ্য অধ্যাপকের পরিচয় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।'
নাজমুল হাসান লিখেছেন, 'ওই একই পন্থা অবলম্বন করেই আজ উনি অধ্যক্ষ। তাই উনার কাছে বিষয়টা স্বাভাবিকের মতোই মনে হবে বা হয়েছে।'
আবসার আহমেদ মনে করেন, 'উনার নিজের আগে কাউন্সেলিং এবং ভালোভাবে ট্রেইনড হওয়া উচিত যে আসলে কীভাবে স্টুডেন্টদের কন্ট্রোল করতে হয়। যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে যে এটা একটা রাজনৈতিক ইস্যু ওদিকে উনি আসছেন কাউন্সেলিং করতে।'
শহিদুল্লাহ চৌধুরী লিখেছেন, 'মেয়েদের সঙ্গে উনারও কাউন্সেলিং প্রয়োজন। কারণ শিক্ষিত হলেই মানুষ হয় না, কিছু কিছু বনমানুষও হয়।'
Comments