ঘোষিত সময়ের আগে থেকেই রাজশাহীতে যান চলাচল বন্ধ, নাকাল যাত্রীরা
মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলেও বুধবার সন্ধ্যা থেকে বেশিরভাগ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে একদিন আগে থেকেই দুর্ভোগে নাকাল হতে হয়েছে যাত্রীদের।
পরিবহন শ্রমিক ও বাসের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একদিন আগেই অধিকাংশ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে যাত্রীদের। তবে রেল যোগাযোগ চালু থাকায় অনেকে রেল স্টেশনমুখি হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সকালে রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। চলাচল করছে না আন্তঃজেলা পর্যায়ের কোনো বাস।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ হয়নি। এ কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, 'রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার বাস চলাচল করে। এই ধর্মঘটের কারণে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দাবি মানা না পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।'
পুলিশ কর্মকর্তা সোলায়মান সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী এসেছিলেন অফিসিয়াল কাজে। বাস বন্ধ থাকায় তিনি আর ফিরে যেতে পারছিলেন না।
আনিসুর রহমান নামের এক যাত্রী অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ থেকে বগুড়ার শিবগঞ্জে যাবেন। কিন্তু পরিবহন ধর্মঘট থাকায় তাকে ভেঙে ভেঙে নসিমনে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, 'অসুস্থ মানুষ নিয়ে নসিমনে করে যেতে চিন্তা হচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'যেখানে ভাড়া লাগতো ৫-৬ শ টাকা। সেখানে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার কারণে ১ হাজার টাকার মতো লাগছে।'
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। বিএনপি নেতাদের দাবি, অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো রাজশাহীর গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতে এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশ কমিটির সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমাবেশে যেন নেতা-কর্মীরা আসতে না পারে সে জন্য রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। ধর্মঘট দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটকে রাখা যাবে না। যে কোনো মূল্যে এই গণসমাবেশ সফল করা হবে।'
তিনি বলেন, 'ধর্মঘট সত্ত্বেও সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য শত শত মানুষ শহরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গণসমাবেশের সঙ্গে তাদের ডাকা ধর্মঘটের কোনো যোগসূত্র নেই। বিষয়টি 'কাকতালীয়'। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের এই কর্মসূচির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।'
Comments