চমেকে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ও হামলা প্রতিবাদ চট্টগ্রাম ক্যাবের

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধি ও এর প্রতিবাদে অংশগ্রহনকারীদের ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), চট্টগ্রাম।
চমেকে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ও হামলা প্রতিবাদ চট্টগ্রাম ক্যাবের
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধি ও এর প্রতিবাদে অংশগ্রহনকারীদের ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), চট্টগ্রাম।

সংগঠনটি কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী এবং প্রতিবাদকারীদের ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হামলাকে ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে এধরনে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হামলার মদদদাতাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, মৃত্যুপথ যাত্রী রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিস একটি অত্যন্ত মানবিক ও জীবনরক্ষাকারী মানবিক স্বাস্থ্যসেবা। কিডনি মানবদেহের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনি বিকল হলে শরীর ফোলা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত মৃত্যু হয়। যেখানে অনেক দরিদ্র রোগীদের পক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) গিয়ে কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। সেখানে কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্য একলাফে ৫-৭ গুন বৃদ্ধি করা কোনো সুস্থ ও শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে না।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জনগণের করের টাকায় তাদের বেতন-ভাতা হয়। আর একটি মানবিক দাবি জানাতে যদি তাদের ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন চড়াও হয়, তাহলে তার চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির যন্ত্রণায় মানুষ একদিকে নিঃস্ব হয়ে আছে। সেখানে চিকিৎসাসহ অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার ডায়ালাইসিসের খরচ যোগাতে গিয়ে একেবারে ফতুর হয়ে গিয়েছে। তাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবার পরিধি বৃদ্ধির জন্য সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে মানবাধিকার ও মানবিক বিষয়ের ওপর শূন্য সহনশীলতা প্রদর্শনের দাবি জানান সংগঠনের সদস্যরা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) এই অঞ্চলের ৫ কোটি মানুষের উচ্চতর চিকিৎসার ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হলেও প্রতি পদে পদে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মকর্তা, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপেশাদার আচরণ, নার্স ও চিকিৎসকদের দায়িত্বপালনে অবহেলা, সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা নানা সময় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হলেও প্রতিকারের দৃষ্টান্ত কম। ইতোপূর্বে দুদক কয়েকবার গণশুনানী করেও পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে পারেনি। একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এধরনের আচরণ কাঙ্ক্ষিত নয়। সংগঠনটির নেতারা কম খরচে ডায়ালাইসিসের সুবিধা নিশ্চিতসহ রোগীদের প্রতি মানবিক আচরণ ও সত্যিকারের মানবিক সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান, বিজ্ঞপ্তিতে যোগ করা হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

Comments