আগে রাজনীতি ছিল নেশা, এখন পেশা: সংসদে কাজী ফিরোজ রশীদ

‘জাতি এখন ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। নিরপেক্ষ কোনো মানুষ নেই। শিক্ষক, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক—সবাই বিভক্ত। পুরো দেশই এখন ২ ভাগে বিভক্ত।’
কাজী ফিরোজ রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ জাতীয় সংসদে বলেছেন, আগে রাজনীতি করাটা ছিল নেশা, আর এখন রাজনীতি করাটা হয়েছে পেশা।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উত্থাপিত প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত শুক্রবার জাতীয় সংসদে স্মারক বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সংসদে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, 'জীবনকে রাতারাতি বদলে দেওয়ার একমাত্র পন্থা হচ্ছে রাজনীতি। রাজনীতি এখন পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে রাজনীতি নেশা ছিল, জীবন বাজি রেখে রাজনীতি করতাম আমরা। এখন সেই নেশা নেই। এটা এখন সবচেয়ে বড় পেশা।'

তিনি বলেন, 'পাকিস্তান আমলে দেখা যেত পাত্র যদি রাজনীতি করে, তাহলে বিয়ে দিতো না। কারণ সে কোনো চাকরি পাবে না, তাহলে খাওয়াবে কী? খাওয়াতে হলে পত্রিকা অফিসে চাকরি করতে হবে, নাহলে বটতলার উকিল হতে হবে, না হয় মুদি দোকানদার হতে হবে অথবা এজিবির কেরানিগিরি। কার কাছে মেয়ে দিবে? কিন্তু এখন যদি শোনে পাত্র সরকারি দল করে, তাহলে বলে আলহামদুলিল্লাহ। এরচেয়ে ভালো পাত্র আর হয় না। কারণ সে কিছু করতে পারবে।'

জাতীয় সংসদের অনেক অর্জনের সঙ্গে দুর্বলতাও আছে দাবি করে ফিরোজ রশীদ বলেন, 'আজ পর্যন্ত একটা কমিশন (বঙ্গবন্ধু হত্যা) গঠন করতে পারছেন না। কারা জড়িত ছিল, এই জাতি যদি জানতে না পারে, তাহলে ইতিহাসের ভগ্নাংশ রেখে লাভ নেই। কারণ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করাটা ছিল বিশাল ষড়যন্ত্র। ডালিম, ফারুক, রশিদ গিয়ে করলো, তা নয়। এর পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল, তা আপনারা বের করলেন না।'

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের (একাংশ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'চরম বামপন্থী, চরম দক্ষিণপন্থী—তাদের নাম উচ্চারণ করা যাবে না। কারণ সমস্ত নৌকায় উঠে চলে গেছে। নৌকা তো আপনারা বাইবেন। নৌকার পাইলট আপনারা। তারা উঠে বসে আছেন। কয়, মাঝি আর কতদূর? পার হতে কতদূর। নির্বাচনের আর ৯ মাস আছে। এরপরই পার করে দিব। তারপর ৫ বছরের জন্য আপনারা নিশ্চিন্ত। তারা নৌকায় উঠে বসে গেছে। এইতো অবস্থা আওয়ামী লীগের।'

ফিরোজ রশীদ বলেন, 'জাতি এখন ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। নিরপেক্ষ কোনো মানুষ নেই। শিক্ষক, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক—সবাই বিভক্ত। পুরো দেশই এখন ২ ভাগে বিভক্ত।'

Comments