রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক নয়: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ
একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়ার রায়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদ প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভের পদ নয়।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির লিটনের হাইকোর্ট বেঞ্চের রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠ আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে ওই রিট আবেদন করা হয়েছিল।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, 'আমরা মনে করি নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) সাবেক কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত থাকলেও, তা কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতির পদে নির্বাচিত হওয়া থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করে না, কারণ রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের লাভজনক পদ নয়।'
মো. শাহাবুদ্দিনকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হিসেবে ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন। আজ সোমবার তিনি শপথ গ্রহণ করলেন।
আদেশে হাইকোর্টের বিচারকরা বলেন, 'আমরা মনে করি যে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি 'লাভজনক পদ' হলেও, 'প্রজাতন্ত্রের সেবাদানে এটি লাভজনক পদ নয়। কারণ রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়া প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য সেবায় নিয়োগের মতো নয়।'
এ ছাড়াও রাষ্ট্রপতির কার্যাবলী সংক্রান্ত বিধান প্রজাতন্ত্রের সেবায় অন্যান্য কর্মচারীদের প্রবিধানের অনুরূপ নয়, রায়ে বলা হয়।
হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, 'আমরা মনে করি যে সংবিধান অনুযায়ী "নির্বাচন" এবং "নিয়োগ" একই অর্থ বহন করে না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হলেন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের 'ঐক্যের প্রতীক'। আর, সংবিধানের নবম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিযুক্ত কর্মচারী।'
মো. শাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২টি পৃথক রিট পিটিশন গত ১৫ মার্চ খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
রিটে মো শাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করার জন্যও হাইকোর্টের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান ৭ মার্চ এবং আবদুল মমিন চৌধুরী ১২ মার্চ পিটিশন দুটি দাখিল করেছিলেন।
২১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের ১৫ মার্চের আদেশ বহাল রাখেন।
Comments