মৌলভীবাজার

ছাত্রলীগকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্র আ. লীগ নেতাদের কাছে জমার নির্দেশ

ছাত্রলীগকে ৩ দিনের মধ্যে সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্র জমার নির্দেশ
গত ৭ জুন মৌলভীবাজারের চৌমোহনা এলাকায় ছাত্রলীগের ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ছাত্রলীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্র ৩ দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

ছাত্রলীগের ২ পক্ষের বিরোধ মিটমাটে গতকাল রোববার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমঝোতা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয় বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক মিয়া।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ৭ জন নেতা-কর্মী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির এক নেতার বাড়িতে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি মাসুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদস্য বদরুল ইসলামসহ ছাত্রলীগের ২ পক্ষের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা এ বৈঠক চলে।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ আজ সন্ধায় বলেন, 'দুই পক্ষের বিরোধ মিটমাট হয়েছে। উভয় পক্ষকে কঠোরভাবে শাসানো হয়েছে। ভবিষ্যতে সংঘর্ষে জড়ালে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।'

'সংঘর্ষের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ৩ দিনের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে জমা দিতে উভয় পক্ষকে বলা হয়েছে,' বলেও জানান মাসুক আহমদ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে ৭ জুন উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জ বাজার চৌমোহনা এলাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি সাহাব উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূঁইয়ার অনুসারী নেতা-কর্মীরা দা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের কয়েক জন নেতা-কর্মীসহ ৫ জন আহত হন। এ সময় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভাঙচুর চালানো হয়। এর প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা প্রায় আধা ঘণ্টা জুড়ী-লাঠিটিলা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক মিয়া সোমবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমরা সেটি সমাধান করে দিয়েছি এবং তাদের কাছে থাকা অস্ত্রগুলো আমাদের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।'

জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ূন কবির বলেন, 'এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কোনো মামলা হয়নি।'

পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ৭ জুন দুপুর ২টায় জুড়ীতে সদ্যবিলুপ্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল গ্রুপের নেতা হুমায়ুন রশীদের নেতৃত্বে ১৫-২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে একটি মিছিল উপজেলার চৌমুহনী থেকে ভবানীগঞ্জ বাজারস্থ নিউমার্কেট এলাকায় আসে। অপরদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূঁইয়া উজ্জ্বল গ্রুপের নেতা জায়ফরনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মিছিল জুড়ী কলেজ থেকে নিউমার্কেট আসে। মিছিল ২টি একই এলাকায় এসে পৌঁছালে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ২ পক্ষের নেতাকর্মীরা। তখন উভয়ের পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিকসহ উভয়পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় পরিবহন শ্রমিকদের ওপর হামলা ও দুটি অটোরিকশা ভাঙচুরের অভিযোগে উত্তেজিত শ্রমিকরা জুড়ি-লাঠিটিলা সড়কটি আধাঘণ্টা অবরোধ করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

11h ago