অধিকারের আদিলুর-এলানের মুক্তির দাবিতে ১০৫ নাগরিকের বিবৃতি

জামিন পেয়েছেন অধিকারের আদিলুর-নাসির
আদিলুর রহমান খান। ছবি: এমরুল হাসান বাপ্পী/স্টার

বাতিলকৃত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের ২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের রায়ে উদ্বেগ জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেছেন দেশের ১০৫ লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক, শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মী।

একইসঙ্গে তারা দেশের মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা, অবারিত মতপ্রকাশের সুযোগসহ সব গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখার দাবি জানিয়েছেন। আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিদাতারা বলেন, বহু সংগঠন ও নাগরিকের উদাত্ত আহ্বান উপেক্ষা করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ও বাতিলকৃত ৫৭ ধারায় মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের ২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। 

'মানবাধিকার সংগঠনের শীর্ষ ২ ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়ার নজিরবিহীন এ ঘটনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় আমরাও বিক্ষুব্ধ ও বেদনাহত,' বলেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্বনামধন্য ও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে 'অধিকার' দীর্ঘদিন ধরে গুম, বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য প্রকাশ করে আসছে। সরকারের তরফে অধিকারের কণ্ঠরোধের সব পদক্ষেপের পর সংগঠনটির শীর্ষ দুই ব্যক্তির শাস্তি ও কারাবাস তাই অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনা দেশে মানবাধিকার চর্চার ক্ষেত্রে তীব্র বাধা তৈরি করবে।

এতে আরও বলা হয়, 'আমরা মনে করি আদিল ও এলানের মামলাসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ও বাতিলকৃত ৫৭ ধারায় চলমান মামলাগুলো অব্যাহত রাখা কোনোভাবে সঙ্গত নয়। একইসঙ্গে বাতিলকৃত নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেওয়া উচিত এবং এ আইনে দায়েরকৃত মামলাগুলো বাতিল করা উচিত। পাশাপাশি, আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আদলে নতুনভাবে গৃহীত সাইবার নিরাপত্তা আইনে সংযুক্ত নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বাতিলের দাবি জানাই।'

'আমরা অবিলম্বে আদিলুর রহমান খান এবং এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের মুক্তি দাবি করছি। একই সঙ্গে মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা, অবারিত মতপ্রকাশের সুযোগসহ সব গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখার দাবি জানাচ্ছি,' যোগ করা হয় এতে।

বিবৃতিদাতারা হলেন-শামসুজ্জামান হীরা, কথাসাহিত্যিক ও মুক্তিযোদ্ধা; কামাল আহমেদ, সাংবাদিক; রাহমান চৌধুরী, নাট্যকার ও শিক্ষাবিদ; রাণী য়েন য়েন, মানবাধিকারকর্মী; ড. সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব; ড. হেলাল মহিউদ্দীন, শিক্ষক ও লেখক; আর রাজী, অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; কাদের গনি চৌধুরী, সাংবাদিক; দিলারা চৌধুরী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অধ্যাপক; সৈয়দ আবদাল আহমদ, লেখক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব; আব্দুল লতিফ মাসুম, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সাবেক উপাচার্য, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; ইলিয়াস খান, সাংবাদিক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেসক্লাব; মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; মুহাম্মদ কাইউম, চলচ্চিত্র নির্মাতা; মোহাম্মদ আজম, লেখক ও অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সায়দিয়া গুলরুখ, সাংবাদিক ও গবেষক; জি এইচ হাবীব, অনুবাদক ও সহকারী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; ওমর তারেক চৌধুরী, লেখক, অনুবাদক; মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, লেখক ও গবেষক; ড. মঞ্জুরে খোদা, লেখক, গবেষক; ড. মোশরেকা অদিতি হক, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; জাহেদ উর রহমান, শিক্ষক, কলামিস্ট ও অ্যাকটিভিস্ট; মাহা মির্জা, লেখক ও গবেষক; রেজাউর রহমান লেনিন, গবেষক ও অধিকার কর্মী; সাকিব আলি, সাবেক কূটনীতিক; আবুল কালাম আল আজাদ, সমন্বয়ক, ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলন; সায়ন্থ সাখাওয়াৎ, লেখক ও চিকিৎসক; রাখাল রাহা, লেখক; সাখাওয়াত টিপু, কবি; ফাহমিদুল হক, ভিজিটিং অধ্যাপক, বার্ড কলেজ, যুক্তরাষ্ট্র; ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, সঙ্গীতশিল্পী; সুস্মিতা চক্রবর্তী, অধ্যাপক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; লতিফুল ইসলাম শিবলী, গীতিকার; জিয়া হাশান, কথাসাহিত্যিক; সায়েমা খাতুন, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী; খসরু চৌধুরী, লেখক, বাঘ বিশেষজ্ঞ; রায়হান রাইন, লেখক-গবেষক ও শিক্ষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; আব্দুল হালিম চঞ্চল, চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক; মুস্তাফা জামান, চিত্র সমালোচক ও শিল্পী; হামীম কামরুল হক, কথাসাহিত্যিক; মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, লেখক ও প্রকাশক; সাঈদ বারী, প্রকাশক; চঞ্চল আশরাফ, কবি; আহমেদ স্বপন মাহমুদ, কবি ও প্রাবন্ধিক; মাহবুব হাসান, কবি; ফিরোজ আহমেদ, প্রবন্ধকার; লুনা রুশদী, লেখক ও অনুবাদক; ফাহাম আব্দুস সালাম, লেখক; শওকত হোসেন, কবি ও সম্পাদক, হালখাতা।

এতে আরও সই করেছেন-মাহবুব মোর্শেদ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক; বাকী বিল্লাহ, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী; মারুফ মল্লিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক; জিয়া হাসান, লেখক; ফেরদৌস আরা রুমী, কবি ও উন্নয়নকর্মী; অমল আকাশ, শিল্পী ও সংগঠক; বীথি ঘোষ, সাংস্কৃতিক কর্মী; গাজী তানজিয়া, সাহিত্যিক; দিলশানা পারুল, নারী অধিকার কর্মী; ওলিউর সান, লেখক ও সংগঠক; মাহাবুব রাহমান, কবি ও প্রকাশক; ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক; সালেহ হাসান নকিব, অধ্যাপক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; শরৎ চৌধুরী, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়; নুরুল আমিন বেপারী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ড. কামরুল আহসান, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; কামরুন্নেসা খন্দকার, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; মো. জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; নসরুল কাদির, অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; মাইনুল হাসান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক, ডিআরইউ; জামাল আবেদীন ভাস্কর, লেখক ও ব্লগার; ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ, অধ্যাপক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; সাঈদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক, ডিইউজে; ড. হাসান আশরাফ, সহযোগী অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ড. জাহেদ আরমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, ফ্রামিংহাম স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র; এনায়েত রসুল, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক; আসিফ সিবগাত ভূঞা, লেখক; দিলরুবা শরমিন, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী; সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিশেষজ্ঞ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, যুক্তরাষ্ট্র; মুসা আল হাফিজ, কবি ও গবেষক; কদরুদ্দীন শিশির, ফ্যাক্টচেক এডিটর, এএফপি; মারজিয়া প্রভা, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট; সাইদা আখতার, সাধারণ সম্পাদক, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা; রেজোয়ান সিদ্দিকী, সাংবাদিক ও লেখক; শামীমা জামান, কথাসাহিত্যিক; হাসান আল মামুন, সাবেক আহ্বায়ক, কোটা সংস্কার আন্দোলন; সালাহ উদ্দিন শুভ্র, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক; মাসুদ কবির, চিত্রশিল্পী; বায়েজিদ বোস্তামী, কবি ও গদ্যকার; পারভেজ আলম, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট; রোজীনা বেগম, গবেষক ও মানবাধিকার কৰ্মী; নুসরাত জাহান, সাংস্কৃতিক কর্মী ও অ্যাকটিভিস্ট; রেবেকা নীলা, সাংস্কৃতিক কর্মী; এহসান মাহমুদ, লেখক ও সাংবাদিক; দীপক রায়, প্রকাশক ও রাজনৈতিক কর্মী; সোহেল রানা, লেখক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক; অর্বাক আদিত্য, কবি; নাদিম হাসান, নাট্যকর্মী ও অ্যাকটিভিস্ট; আরিফুল ইসলাম আদীব, অ্যাকটিভিস্ট ও সাংবাদিক ও ড. মোহাম্মাদ আল আমিন, অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 

Comments

The Daily Star  | English
EU helping Bangladesh to strengthen border security

EU recommends revising ICT's legal framework in line with int'l standards

EU also underlined the importance of ensuring due process at all stages of proceedings to ensure justice

1h ago