উপজেলা পরিষদের বাইরে গাড়ি রাখতে বলায় ইউএনওর ওপর হামলা

ইউএনও আজিজুর রহমান নিজে সেখানে উপস্থিত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে ডেকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপজেলা পরিষদে আসার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গাড়ি উপজেলা পরিষদের বাইরের খোলা জায়গায় নিয়ে রাখতে বলেন তিনি। এতে ইউপি চেয়ারম্যান ইউএনওর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনওর ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা। ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা পরিষদ চত্বরে গাড়ি রাখতে নিষেধ করায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর হামলা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কালীগঞ্জের মোক্তারপুরের ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি আলমগীর হোসেনের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটে।

আজ শনিবার দুপুরে এই ঘটনার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা চত্বরে অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের ওপরও চড়াও হন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ বিকেলে শহীদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদের ৩৯তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক স্মরণ সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ উপলক্ষে দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টার দিকে আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে জড়ো হন। তখন উপজেলা পরিষদের হলরুমে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। বাইরে আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকশ লোক বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাদের স্লোগান থামাতে বলা হলেও তারা তা মানছিলেন না। উপস্থিত আনসার সদস্যরা নেতাকর্মীদের গাড়ি উপজেলা চত্বরের বাইরে রাখার অনুরোধ করলে উত্তেজনা তৈরি হয়।

এ সময় ইউএনও আজিজুর রহমান নিজে সেখানে উপস্থিত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে ডেকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপজেলা পরিষদে আসার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গাড়ি উপজেলা পরিষদের বাইরের খোলা জায়গায় নিয়ে রাখতে বলেন তিনি। এতে ইউপি চেয়ারম্যান ইউএনওর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন। ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা তখন ইউএনওসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান।

ইউএনও আজিজুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান ও তার নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে জটলার সৃষ্টি করে অটোরিকশা এবং মোটরসাইকেল রেখেছিলেন। তাদের গাড়ি চত্বরের বাইরে রাখার অনুরোধ করার পর চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। উনার উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তার দিক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Comments