ডিসি-ইউএনওদের জন্য ২৬১ গাড়ি, প্রতিটির দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা

একদিকে ব্যয় কমাতে কঠোর উদ্যোগ গ্রহণ করছে, অন্যদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য ২৬১টি স্পোর্টস ইউটিলিটি গাড়ি (এসইউভি) কিনতে যাচ্ছে সরকার।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) আওতায় ৩৮১ কোটি টাকায় এই গাড়ি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য জানিয়েছে।

সাধারণত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অতিরিক্ত সচিব সংবাদ সম্মেলনে করে বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত জানিয়ে থাকেন। তবে গতকালের এই সিদ্ধান্তের জানাতে কোনো সংবাদ সম্মেলন করা হয়নি।

মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার ঘোষণা দিলেও গতকাল তারা জানায়, 'অনিবার্য' কারণে ব্রিফিং বাতিল করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রিজার্ভ হ্রাসের এই সংকটময় সময়ে কী বিবেচনায় এই সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গত করা হয়েছে, তা জনগণকে কেন পরিষ্কারভাবে জানানো হচ্ছে না?'

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বরাদ্দের আওতায় সরকারি অফিসগুলোতে সব ধরনের যানবাহন ক্রয় বন্ধ থাকবে বলে গত জুলাইয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়।

মিৎসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট কিউএক্স মডেলের প্রতিটি গাড়ির দাম পড়বে এক কোটি ৪৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। ২৬১টি গাড়ি কিনতে মোট ব্যয় হবে ৩৮১ কোটি টাকা।

২৬১টি গাড়ির মধ্যে ৬১টি কেনা হবে ডিসিদের জন্য। বাকি ২০০টি ইউএনওদের জন্য।

ডিসি ও ইউএনওরা নির্বাচনের সময় গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী ভূমিকা পালন করেন। সাধারণত ডিসিরা রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ও ইউএনওরা সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন।

বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করার জন্য নতুন গাড়িগুলো কেনা প্রয়োজন, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যও অত্যাবশ্যক।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'সরকার ব্যয় কমানোর কথা বলছে—এমন একটি সময়ে যদি এই গাড়িগুলো কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া না হতো, তাহলে সেগুলোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো কারণ থাকত না। অন্তত এটুকু এখন বলা যায় যে, তারা যা বলছে, সেটার চর্চা করতে তারাই ব্যর্থ হয়েছে।'

'জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তুষ্ট করার মাত্রা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে হোক কিংবা নিয়মিত প্রশাসনিক ব্যয়ের অংশ হিসেবেই হোক না কেন—মনে রাখা দরকার যে, এ ধরনের খরচ সাধারণ করদাতাদের বোঝা বাড়াবে, যাদের জীবনে ইতোমধ্যে আর্থিক সংকটের প্রভাব পড়েছে', যোগ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

Comments

The Daily Star  | English

Inside the July uprising: Women led, the nation followed

With clenched fists and fierce voices, a group of fearless women stood before the locked gates of their residential halls on the night of July 14, 2024. There were no commands, no central leader -- only rage and a deep sense of injustice. They broke through the gates and poured into the streets.

14h ago