দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২০ রুটে ১২ ঘণ্টার আকস্মিক বাস ধর্মঘট, দুর্ভোগে হাজারো যাত্রী 

যাত্রীদের দাবি, কোনো ঘোষনা ছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২০ রুটে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডেকেছে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২০ রুটে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডেকেছে। ছবি: স্টার

বুধবার সকালে জরুরি কাজে সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় পৌঁছান সুনীল দাশ। তখন সকাল ৮টা। তবে বিস্ময়ের সঙ্গে সুনীল দেখতে পান, চট্টগ্রামের অস্থায়ী বাস টার্মিনালটি থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটের পাশাপাশি কক্সবাজার ও বন্দরবান রুটে কোনো বাস চলাচল করছে না।

তিনি পরে জানতে পারেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২০ রুটে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডেকেছে।

'কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এটা কী ধরনের ধর্মঘট? এই ধর্মঘট সম্পর্কে আমরা তো কিছুই জানি না', বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুনীল।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাকে গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলায় যেতে হবে। কিন্তু এখানে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে আছি।'

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২০ রুটে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডেকেছে। ছবি: স্টার

সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, মহাসড়কে থ্রি হুইলার ও হিউম্যন হলার চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে বুধবার পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের আকস্মিক ধর্মঘটের কারণে সুনীলের মতো দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন গন্তব্যের শত শত যাত্রী কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় আটকা পড়েন।

আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা দক্ষিণ চট্টগ্রামের রুটসমূহে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় সকাল থেকে কোনো বাস গন্তব্যে ছেড়ে যায়নি। তাছাড়া অধিকাংশ যাত্রী ধর্মঘটের কথা না জানার কারণে অস্থায়ী বাস টার্মিনালে প্রচণ্ড রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।

অস্থায়ী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের জন্য কোনো বিশ্রামাগার এবং শৌচাগার না থাকায় অপেক্ষমান যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। 

আরেক যাত্রী আব্দুল মান্নান বলেন, 'এখানে অপেক্ষা করার কোনো ব্যবস্থা নেই, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে অবস্থা খারাপ।'  

তবে পরিবহন নেতারা দাবি করছেন, তাদের আজকের সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট আকস্মিক কোনো কর্মসূচি নয়।

আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুসা বলেন, 'আমরা একই দাবিতে গত ৯ অক্টোবর দুই ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করেছিলাম। ওই দিনের ধর্মঘট ছিল একটি প্রতীকী কর্মসূচি।'

'ওই দিন আমরা বলেছিলাম, যদি ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন আমদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ না করে, তবে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। তাই আজকে আমাদের এই কর্মসূচি।'

মুসা বলেন, 'টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামের সাতটি উপজেলা এবং কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলাসহ ২০টি রুটে বাস চলাচল করে।'

পরিবহন নেতাদের দাবির বিষয়ে জানতে বিআরটিএ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (সাধারণ) আমীর খসরু ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

 

Comments