‘পাহাড়ে সম্ভাবনাময় তরুণ নেতৃত্ব হত্যা’র প্রতিবাদে ৪৩ নাগরিকের বিবৃতি

পার্বত্য অঞ্চল
স্টার ফাইল ফটো

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে সোমবার রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ইউপিডিএফের ৪ নেতাকর্মী হত্যার নিন্দা জানিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন দেশের ৪৩ নাগরিক।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা 'পাহাড়ে সম্ভাবনাময় তরুণ নেতৃত্বের হত্যাকাণ্ডে' ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'সোমবার রাতে পানছড়ি উপজেলার লোগাঙ ইউনিয়নের অনিল পাড়ায় "দুর্বৃত্তদের" গুলিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমাসহ ৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত অন্যরা হলেন সুনীল কান্তি ত্রিপুরা, লিটন চাকমা ও রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা। আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।'

বিবৃতিদাতারা বলেন, 'পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, এ ঘটনায় নিখোঁজ আছেন নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও প্রকাশ ত্রিপুরা। এ সহিংসতার ঘটনায় পাহাড়ে সম্ভাবনাময় তরুণ নেতৃত্বের মৃত্যুতে আমরা ক্ষুব্ধ।'

বিবৃতিতে বলা হয়, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাহাড়ে তরুণ নেতৃত্বের ওপর এমন আক্রমণ ঘটতে এর আগেও দেখেছি। পার্বত্য চুক্তি সইয়ের ২৭ বছর পরেও পাহাড়ে সেনা উপস্থিতি বহাল রাখা হয়েছে এই যুক্তিতে যে তারা পাহাড়ের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে।'

'আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি যে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন প্রতিশ্রুত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না, বরং অভিযোগ আছে যে তাদের সজ্ঞানে সশস্ত্র দুষ্কৃতকারীরা দিনে-দুপুরে পাহাড়ে চাঁদাবাজি ও সহিংসতা চালাচ্ছে,' বলা হয় এতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'অনেকের আশঙ্কা, পাহাড়ে বাঙালি জাতিগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেখানকার তরুণ নেতৃত্বকে পরিকল্পিতভাবে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে। এই সন্দেহ যদি কিয়দংশ সত্য হয় তাহলে আমরা এ দেশের নাগরিক হিসেবে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে হত্যার রাজনীতি কোনোদিন পাহাড়ে শান্তি আনবে না।' 

এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে ও বিচার দাবি করে বিবৃতিদাতারা বলেন, 'একইসঙ্গে আমাদের দাবি, নিখোঁজ ৩ তরুণকে উদ্ধারের জন্য অনতিবিলম্বে বিশ্বাসযোগ্য ব্যবস্থা  নেওয়া হোক। আমরা আশা করছি, সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন জনমনে বিরাজমান সব আশঙ্কা এবং অভিযোগ আমলে নিয়ে পাহাড়ে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নটিকে নিষ্ঠার সঙ্গে বিবেচনা করবে।'

বিবৃতিদাতারা হলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আকমল হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সর্বজনকথার সম্পাদক আনু মুহাম্মদ, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভা প্রধান মোশরেফা মিশু, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী ইলিরা দেওয়ান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাঈদ ফেরদৌস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আইনুন্নাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী সেহরীন ইসলাম,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষক মনিরা শরমিন, সঙ্গীতশিল্পী বীথি ঘোষ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, লেখক ও সঙ্গীতশিল্পী অরূপ রাহী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, সঙ্গীতশিল্পী অমল আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, লেখক ও অনুবাদক ওমর তারেক চৌধুরী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামলী শীল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মঈন জালাল চৌধুরী, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী নাজনীন শিফা, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সমন্বয়কারী ও আলোকচিত্রী   তাসলিমা আখতার, লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা, আলোকচিত্রী জান্নাতুল মাওয়া, অ্যাকটিভিস্ট মারজিয়া প্রভা, রাজনৈতিক কর্মী এবং এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাবেক প্রেসিডেন্ট ইকবাল কবীর, নৃ-বিজ্ঞানী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসরিন সিরাজ, লেখক ও গবেষক সায়েমা খাতুন, যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাদাফ নূর, নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক নাসরিন খন্দকার, মানবাধিকার কর্মী ও থাইল্যান্ডের মাহিডল বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষার্থী রোজিনা বেগম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মাইদুল ইসলাম, কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক হানা শামস আহমেদ, শিক্ষক ও নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভানেত্রী লায়লা পারভীন, শিল্পী ও গবেষক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক ও গবেষক সায়দিয়া গুলরুখ, লেখক রেহনুমা আহমেদ।

 

Comments

The Daily Star  | English

123 ‘pushed in’ from India

Border Guard Bangladesh (BGB) yesterday detained at least 123 individuals, including Rohingyas and Bangla-speaking individuals, after India pushed them into Bangladesh through Kurigram and Khagrachhari border points.

1h ago