‘খেজুরের বিকল্প খেজুরই’

কয়েকটি খেজুরের দোকানের একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দাম হলেও খেজুরের বিক্রি কমেনি। প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষই সাধ্যমতো খেজুর কিনছেন।
ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

রমজানের আগে বাংলাদেশে খেজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ইফতারে খেজুরের পরিবর্তে বরই খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

গত সোমবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'খেজুর নিয়ে আমাদের অভাব অভিযোগ আছে। বরই দিয়ে ইফতার করেন। খেজুর-আঙ্গুর কেন লাগবে?'

তবে রোজা শুরুর আগের দিন আজ সোমবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে খেজুরের দোকানগুলোতে উপচে পরা ভিড় দেখা গেছে। অন্যদিকে, ফলের দোকান ও বরইয়ের বিক্রি তেমন বাড়েনি বললেই চলে।

কারওয়ান বাজারে ঝুড়িতে করে বরই বিক্রি করেন মো. সোহাগ। গত দুমাস ধরে প্রতিদিন দুই কার্টন (৬৪ কেজি) বরই বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'রোজার কারণে বিক্রি বাড়েনি। তবে দাম বেড়েছে। ১৫ দিন আগেও বরই বিক্রি করতাম কেজিপ্রতি ৭০-১০০ টাকায়। এখন বিক্রি করি ১০০-১৩০ টাকায়।'

দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বরইয়ের সিজন শেষ। সেজন্য দাম বেড়েছে।'

'দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু রোজার জন্য বিক্রি কমেনি। বিক্রির পরিমাণ একই আছে,' বলেন তিনি।

সোহাগের কাছ থেকে বরই কিনতে আসা মোজ্জামেল হোসেন বলেন, '২ কেজি বরই কিনেছি ২৬০ টাকায়। ১০ দিন আগেও ৮০ টাকা কেজিতে এই বরই কিনেছিলাম। আগামীকাল থেকে রোজা শুরু। মূলত ইফতারের জন্যই ফল কেনা।'

খেজুরের বিকল্প হিসেবে বরই কিনলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'খেজুরও কিনেছি। ইফতারে খেজুর তো থাকবেই। সঙ্গে কমলা, মাল্টা, কলা—এসব কিনলাম। আমাদের চার সদস্যের পরিবার। বরই আমরা এমনিতেই খাই।'

জানতে চাইলে ফল বিক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, 'বরই খেজুরের বিকল্প না। খেজুরের বিকল্প খেজুরই। দুটির ধরণ আলাদা, স্বাদ আলাদা। একজন মন্ত্রী বলেছেন, খেজুর না খেয়ে বরই খেতে। কিন্তু বরই তো খেজুরের বিকল্প না।'

কয়েকটি খেজুরের দোকানের একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দাম হলেও খেজুরের বিক্রি কমেনি। প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষই সাধ্যমতো খেজুর কিনছেন।

খেজুর কিনতে আসা দিনমজুর আবুল কালাম আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খেজুরের দাম অনেক বেশি। কিন্তু ইফতারে খেজুরের সঙ্গে অন্যকিছুর তুলনা হয় না। আমরা নিম্নআয়ের মানুষ। সারা রোজায় তো আর এত দাম দিয়ে খেজুর খেতে পারবো না, প্রথম কয়েকদিন অন্তত ইফতারে খেজুর রাখার চেষ্টা করব। পরে হয়তো আর সেই সামর্থ্য হবে না।'

Comments