গাজীপুর

মূল্যায়ন নেই, বরমী বাজারের কামার পেশা বিলুপ্তির পথে

বরমী বাজারের কামারের দোকান। ছবি: স্টার

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় জেলায় সবচেয়ে প্রাচীন বিখ্যাত বরমী বাজারে কামার পল্লিতে কামার পেশা বিলুপ্তির পথে।

জানা গেছে, কামারশালায় তৈরি উপকরণের ব্যবহার কমে যাওয়ায় কাজের চাহিদা কমে গেছে বলে কর্মকারেরা এ পেশায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

গত কয়েক বছর আগে এ বাজারে ৭৩টি কামারের দোকান থাকলেও বর্তমানে তিনটি দোকানে কামারদের কাজ করতে দেখা গেছে।

আজ বুধবার সকালে বরমী বাজারে পশুর হাট সড়কে কামার পল্লিতে গিয়ে দেখা যায়—কালি কর্মকার, মাখন কর্মকার, শচীন্দ্র কর্মকার, স্বপন কর্মকার, সুরেশ কর্মকার, মধু কর্মকার, নরেশ কর্মকার, বজা কর্মকার, রাজেশ্বাম কর্মকারের দোকান আছে।

এতগুলো দোকান থাকলেও মাত্র তিনটি দোকানে কাজ চলছে।

শ্রীপুর থেকে এসেছেন লাইলী বেগম। তার সঙ্গে আরও দুজন বটি, দা, কুড়াল, শাবল নিয়ে এসেছেন। কুড়াল মেরামত করতে দাম ঠিক করলেন ১৫০ টাকা। আর কোনো দোকান না পেয়ে এই দোকানেই দাম ঠিক করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

নরেশ কর্মকারের দোকানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। কামারের কাজের গর্তে পানি জমে আছে। পাশে লোহার কয়েকটি খণ্ড পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশের দোকানি ডেইলি স্টারকে জানান, নরেশ এখন আর কাজ করেন না।

বাজারের বজা কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েক বছর আগেও বাজারে দোকান ছিল ৭৩টা। এখন কাজ চলছে তিন দোকানে। কামার সংকট দেখা দিয়েছে। এখন মানুষ এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। মানুষ কোথায় কী কাজ করছেন আমি জানি না।'

বজা কর্মকারের সহকারী বলেন, 'দোকান কমে যাওয়ায় আমাদের দোকানে চাপ বেশি।'

মহেন্দ্র কর্মকারের ছেলে দুলাল কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বয়সের কারণে আমি কামারের কাজ ছেড়ে দিয়েছি। আমার বংশের কয়েকজন অন্য এলাকায় এ পেশার কাজ করেন। এক সময় এই লাইনে অনেক দোকান ছিল। এখন সেগুলো কাপড় ও জুতার দোকান হয়েছে।'

জৈনক কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পেশা ছেড়ে বেশিরভাগ মানুষ অটোরিকশা চালায়।'

বরমী বাজার বণিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সুমন কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন কামারের কাজের চাহিদা কম। মনে হয়, ভবিষ্যতে এ পেশায় কেউ কাজ করবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'যেখানে সামাজিক মর্যাদা নেই, সেখানে মানুষ কাজ করবে কেন? এই পেশায় কী আছে? মানুষকে ঠিকমতো মূল্যায়ন করা হয় না।'

Comments

The Daily Star  | English

Wrap up polls preparations by December

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday ordered the authorities concerned to complete, by December, the preparations for the upcoming national election.

8h ago