জলদস্যুদের পাহারায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন জিম্মি ২৩ নাবিক

নাবিকরা সেমাই রান্না করেছেন, কিন্তু দুপুরে গতকালকের বাসি খাবার খেতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি সংগৃহীত

সোমালি জলদস্যুদের পাহারায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিক।

আজ বুধবার সকালে সোমালিয়ার উপকূলে নোঙর করা জাহাজটির ডেকে তারা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। এ সময় অস্ত্রসহ পাহারা দিচ্ছিল জলদস্যুরা।

জিম্মি এক নাবিকের ছোট ভাই দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তার ভাই তাকে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার দিকে ফোন করেছিলেন। এ সময় তিনি জানিয়েছেন যে, আজ সোমালিয়ায় ঈদ উপযাপন হচ্ছে এবং তারা ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

নাবিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্য ডেইলি স্টার তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করছে না।

ওই নাবিক তার ভাইকে ফোনে জানান, বারবার অনুরোধের পর জলদস্যুরা তাদের ঈদের নামাজ পড়ার সুযোগ দেয় এবং নামাজের পর তারা কেবিনে অবস্থান করেন।

নাবিকের ভাই ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাইয়া পরিবারের অন্যান্যদের খবর নিয়েছেন। পরে তিনি তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং আমাদের মাকে ফোন করেছেন।'

আরেক নাবিকের স্ত্রীও ঈদের নামাজ আদায়ের বিষয়টি ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। তার স্বামী বিকেল ৫টার দিকে ফোন করেছিলেন বলে তিনি ডেইলি স্টারকে জানান।

কথোপকথনের বরাত দিয়ে নাবিকের স্ত্রী বলেন, 'সকালে জাহাজের সিনিয়র নাবিকরা দস্যুদের কাছে অনেকবার নামাজের সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে জলদস্যুরা তাদের ঈদের নামাজ পড়তে দেয়।'

'তারা জাহাজের ডেকে নামাজ আদায় করেন এবং সে সময় ভারী অস্ত্রসহ জলদস্যুরা তাদের পাহারা দেয়,' ডেইলি স্টারকে বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'জাহাজে তারা সেমাই রান্না করেছেন। কিন্তু দুপুরে গতকালকের বাসি খাবার খেতে হয়েছে বলে আমার স্বামী জানিয়েছেন।'

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে সবশেষ অবস্থা এবং ঈদের নামাজের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের মূল সংস্থা কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলামের সঙ্গে।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে তার কাছে নতুন কোনো তথ্য নেই।'

তবে চলতি মাসের মধ্যে জাহাজের ২৩ নাবিককে উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমাদের প্রথম দায়িত্ব নাবিকদের উদ্ধার করা এবং তারপর দেশে ফিরিয়ে আনার পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা। এ বিষয়ে কাজ চলছে। পুরো পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে এবং আমরা আশা করি শিগগির আমরা তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।'

গত ১২ মার্চ কয়লাবাহী এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি ২৩ নাবিকসহ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়া উপকূলে দস্যুদের কবলে পড়ে। মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের আল হামরাহ যাচ্ছিল জাহাজটি। সোমালিয়া উপকূল থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা অবস্থায় জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus-led interim govt takes charge

2 months of interim govt: Hopes still persist

The interim government had taken oath two months ago with overwhelming public support and amid almost equally unrealistic expectations.

2h ago