মৌলভীবাজারে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ২৫০ ঘরবাড়ি

‘ঝড়ে কুলাউড়া উপজেলায় আড়াই শতাধিক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাসিন্দা গৃহহীন হয়েছেন।’
কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি। ছবি: স্টার

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার লালারচকের বাসিন্দা তারিবুন্নেশা বিলাপ করে বলছিলেন, 'ঝড়ে আমার ঘর, রান্নাঘর, সব জিনিসপত্র উড়ে গেছে। আমি এখন খোলা আকাশের নিচে। কী খাবো জানি না।'

এক মিনিটের মধ্যেই একমাত্র মাথাগোঁজার ঠাঁই উড়ে গেছে বলে জানান তারিবুন্নেশার প্রতিবেশী বৃদ্ধ আব্দুল জলিল।

কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ছবি: স্টার

শুধু লালারচকে না, জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলায় শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েক শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃষ্টির সঙ্গে পড়া শিল। ছবি: স্টার

আজ রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুলাউড়া উপজেলায় ঝড়ের ফলে আড়াই শতাধিক বসতবাড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছপালা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাছ ভেঙে পড়ে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছবি: স্টার

সরেজমিনে দেখা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে অনেকের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, গাছ উপড়ে ঘর ও দোকানের ওপর পড়েছে, সড়কে গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল।

কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, 'ঝড়ে কুলাউড়া উপজেলায় আড়াই শতাধিক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাসিন্দা গৃহহীন হয়েছেন।'

শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা বলেন, 'শক্তিশালী ঝড়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আমার ইউনিয়নের শতাধিক স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ের কবলে অনেক গাছপালা ভেঙে গেছে এবং আহত হয়েছেন একজন।'

ভেঙে পড়া গাছ কেটে রাস্তা যান চলাচলের উপযোগী করার কাজ চলছে। ছবি: স্টার

শ্রীমঙ্গলের ইউএনও মো. আবু তালেব জানান, উপজেলার আশপাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে।

গাছ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি। ছবি: স্টার

'তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের অবহিত করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

গাছ ভেঙে পড়ে বেশকিছু রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। ছবি: স্টার

মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক মীর বলেন, 'ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি খুঁটি ভেঙে গেছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।'

Comments