অনলাইন জুয়া-বেটিং-গেমিংয়ের কারণে অর্থপাচার বাড়ছে: অর্থমন্ত্রী

উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের অর্থায়ন ছাড় আগের চেয়ে সহজ হবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন জুয়া, বেটিং, গেমিং, হুন্ডির কারণে অর্থপাচার বাড়ছে বলে সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন। 

আজ বৃহস্পতিবার সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়। 

অর্থমন্ত্রী উত্তরে বলেন, 'বর্তমান সময়ে দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ব্যাপক প্রসারের কারণে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএসএস) ও ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে লেনদেনের মাত্রা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।'

তিনি বলেন, 'প্রযুক্তির এই উন্নয়নের সুবিধা কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু চক্র অনলাইন জুয়া, বেটিং, গেমিং, ফরেক্স, ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং ও হুন্ডি ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে একদিকে দেশ থেকে মুদ্রা পাচার হচ্ছে ও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। ফলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।'

অনলাইন জুয়া, বেটিং ও হুন্ডির মাধ্যমে অর্থপাচার রোধসহ সব ধরনের অর্থপাচার বন্ধে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউ) ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'অনলাইন জুয়া, বেটিং ও হুন্ডির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫৮৬টি ব্যক্তিগত এমএফএস হিসাব বিএফআইইউ স্থগিত করেছে। পাঁচ হাজার ৭৬৬ জন এজেন্টের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও হুন্ডি লেনদেনের সঙ্গে জড়িত পাঁচ হাজার ২৯টি এজেন্টশিপ বাতিল হয়েছে। ১০ হাজার ৬৬৬টি এমএফএস এজেন্ট হিসাবের লেনদেন ব্লক করা হয়েছে।'

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আরও জানান, এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক হাজার ৯৬টি ওয়েবসাইট, ১৮২টি অ্যাপ্লিকেশন ও এক হাজার ২টি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ চিহ্নিত করে বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সরবরাহ করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, জুয়া, অনলাইন জুয়া, ক্যাসিনো ইত্যাদির সংজ্ঞা ও এসব অপরাধের কঠোর শাস্তির বিধান সংযোজন করে দ্য পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট ১৮৬৭ সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদসহ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত কৃষকের কোনো কৃষি ঋণ মওকুফ করা হয়নি। এ সংক্রান্ত কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। ব্যাংক আমানতকারীদের থেকে সংগৃহীত অর্থ কৃষকদের মাঝে কৃষি ঋণ হিসেবে বিতরণ করে থাকে। আমানতকারীদের থেকে সংগ্রহ করা অর্থ সুদসহ ফেরত দিতে হয় বলে ব্যাংকের পক্ষে কৃষি ঋণ মওকুফ করা সম্ভব হয় না।'

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আগামী অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বৃদ্ধি করার কোনো পরিকল্পনা এ মুহূর্তে সরকারের নেই।'

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য একে আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর জুলাই থেকে গত ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্থানীয় মুদ্রাবাজারে নিট ৯ হাজার ১৩৯ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে।

বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নে ন্যাশনাল ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্তের পরে ন্যাশনাল ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তন কিভাবে হলো জানতে চান। একইসঙ্গে মালিকানা পরিবর্তনের পরে ব্যাংকটি একীভূত হবে কি না, জানতে চান তিনি।

জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টি আমার কাছে খুব স্পষ্ট নয়। আরও বিস্তারিত জেনে আপনাকে জানাব।'

আগামী অর্থবছরে অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'প্রস্তাবিত বাজেটে এটা আছে কি না, আমি এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। বলা সম্ভব নয়। বাজেট প্রস্তাবনা এখনো ফাইনাল হচ্ছে। আগের বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ থাকলে, আগামী বাজেটেও সেই সম্ভাবনা আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

'Election Commission shamelessly favouring a particular party'

Hasnat Abdullah says police obstructed NCP leaders and activists from entering EC building

25m ago