অবরোধে যানজট, ৩ ঘণ্টায় ধানমন্ডি থেকে শাহবাগ

কোটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে আজ বিকেলে ফামর্গেটে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে ভয়াবহ যানজট দেখা যায়। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আব্দুল মতিন (৫০)। আজ সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে পল্টনে বাসার দিকে রওনা হন বিকেল ৩টার পর।

এর মধ্যেই কোটা বাতিলের দাবিতে সায়েন্সল্যাব ও শাহবাগ মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় সায়েন্সল্যাবের আগেই আটকা পড়েন মতিন। তাকে বহনকারী প্রাইভেটকারটি ধীরে ধীরে কাঁটাবন পেরিয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শাহবাগ পৌঁছায়।

অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায় নগরবাসীকে। ছবি: সুচিস্মিতা তিথি/স্টার

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শাহবাগ মোড়ে দ্য ডেইলি স্টারকে আব্দুল মতিন বলেন, 'পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে প্রাইভেটকারে বসে তিন ঘণ্টায় ধানমন্ডি থেকে শাহবাগ পৌঁছালাম। পল্টনের দিকে আমার বাসা। কখন পৌঁছাব জানি না।'

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিকেল ৪টার দিকে সায়েন্সল্যাব ও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

পরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার হয়ে ফার্মগেটে অবস্থান নেয়। আরেকটি অংশ মৎস্য ভবনের দিকে অবস্থান নেয়।

আগারগাঁওয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সড়ক অবরোধ করে।

শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির কারণে মিরপুর রোড, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, বেগম রোকেয়া সরণিসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।    

এসময় সড়কে চলাচলকারী যানবাহন অবরোধে আটকে পড়ে। যানবাহনগুলো থেকে যাত্রীরা নেমে পায়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে যেতে থাকেন।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে এক পরিবারের পাঁচজনকে দেখা যায় হেঁটে রাস্তা পার হতে। জানতে চাইলে তাদের একজন ইয়াসমিন (৪৩) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের বাসা মিরপুর। ইস্কাটনে এক আত্মীয়ের বাসায় এসেছিলাম পারিবারিক কাজে। এখন তো রাস্তায় বের হয়ে দেখি অবরোধ। কতক্ষণ অপেক্ষা করব। তাই হেঁটেই রওনা হলাম মিরপুরের দিকে। বাস পেলে উঠে যাব'

পাশেই মিরপুর রুটের কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। বাসে কোনো যাত্রী নেই। শিকড় পরিবহনের একটি বাসের চালক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চারটা থেকে আটকে আছি এখানে। সব যাত্রী নেমে গেছে। আমি আর আমার হেল্পার অপেক্ষা করছি। রাস্তা ছাড়লে বাস নিয়ে যাত্রাবাড়ি যাব।'

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। তবে,  বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধের খবর পাওয়া যায়নি।

গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধের কারণে বিকেল ৫টায় অফিস শেষ হওয়ার পর গুলশান, বনানী, মহাখালী এলাকাতেও যানজট সৃষ্টি হয় বলে বনানী থানার ওসি কাজী শাহান হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

9h ago