জনগণ জেগে উঠেছে, পতন তাদের অনিবার্য: ফখরুল

মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ফটো

জনগণ জেগে উঠেছে, পতন তাদের (সরকারের) অনিবার্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের বিপর্যয়, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে গুলি এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ফখরুল বলেন, মানুষ এই রাজপথ দখল করলে জনতার যে ঢল নামবে, সমুদ্রের যে ঢেউ উঠবে, সেই ঢেউয়ে যে সুনামি সৃষ্টি হবে, সেই সুনামিতে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগ ভেসে চলে যাবে।

মানুষকে সংগঠিত করার নির্দেশ দিয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দেশকে বাঁচানোর জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

ফখরুল বলেন, আজকে আমার জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে, আমার দেশের গণতান্ত্রিক যে আত্মা সেই আত্মাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই আত্মাকে বাঁচানোর জন্য আজকে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে রাজপথ দখল করে এদের সরাতে হবে।

আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, আমাদের দাবিগুলো খুব সামান্য। সেই দাবি হচ্ছে—দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, এই সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য, বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা (সরকার) আজকে খুব ভদ্রলোক হয়ে গেছে। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দেশের চাপ; বিভিন্ন চাপ যে, বিরোধী দলকে সভা-সমিতি করতে দাও না। পরে দেখাচ্ছে যে, আমরা বিরোধী দলকে সভা-সমিতি করতে দিচ্ছি। আমরা কালকেও একটা সমাবেশ করেছি। খুব বেশি ঝামেলা করেনি। আজকে আমরা এখানে বসে আছি, চারদিকে আমাদের কর্মী ভাইয়েরা আছে। খুব ঝামেলা করছে না। কারণ এটাই তারা দেখাচ্ছে যে, আমরা খুব গণতান্ত্রিক দল। আমরা খুব ঝামেলা করি না। এটা প্রতারণা। প্রতারণা তাদের চরিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। গত ১৫ বছরে তারা আমাদের ছয় শতাধিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক কর্মীকে তারা হত্যা করেছে। সেদিন ভোলায় বিনা কারণে দুজন তরুণ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে।

এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধবংস করছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন, কীভাবে ব্যাংকগুলো খালি হয়ে যাচ্ছে, এতো লুটপাট! সব নিয়ে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও লুট হয়ে যায়। কিছু দিন আগে আমাদেরকে সিঙ্গাপুর দেখাচ্ছিল, এই যে মেট্রোরেল হচ্ছে, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাচ্ছে, মালয়েশিয়া হয়ে যাচ্ছে আর এ্রখন রিজার্ভ নামতে নামতে একেবারে নিচের দিকে নামা শুরু হয়েছে। শ্রীলংকাকে বাহাদুরি দেখিয়ে আড়াই'শ মিলিয়ন ডলার লোন দিলো। এখন আপনার আইএমএফের কাছে, বিশ্ব ব্যাংকের কাছে, এডিবির কাছে আবার সেই লোন চাচ্ছে। এরা চুরি করে ডাকাতি করে আমাদের দেশের সব সম্পদ পাচার করেছে। আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠান বলছে যে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮২৭ কোটি ডলার পাচার হয়।

বিদ্যুতের পাওয়ার প্ল্যান্ট ও অন্যান্য চুরি-চামারিতে ৭৮ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই দিয়ে দিয়েছে। কাদেরকে দিয়েছে? তাদের যারা ব্যবসায়ী, তাদেরকে যারা টাকা-পয়সা দেয়, তাদেরকে যারা কমিশন দেয়, ঘুষ দেয় তাদেরকেই তারা এই ৭৮ হাজার কোটি দিয়েছে, বলেন তিনি।

ফখরুল আরও বলেন, জ্বালানি তেলে দাম বাড়িয়েছে। এখন আবার বলছে সমন্বয় করবো। আন্তর্জাতিক বাজারে তো তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। আমেরিকাতে আমার ছোট বোন থাকে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তোমাদের ওখানে তেলের দাম কত? সে বললো, আগে ১৪ ডলার ছিল, তা কমে ৩ ডলারে এসেছে। আর আমাদের আগে যে দাম ছিল ৭৮ টাকা তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১২৫ টাকা। তাহলে সমন্বয় কোথায় করছেন? এখন বিশ্ব বাজারে দাম কমছে আপনারা কমাচ্ছেন না কেন? ওই যে তারা আবার চুরি করবে। এই সরকার ডাকাতি করছে, পুরো টাকা চুরি করছে। বর্গিদের মতো তারা অবস্থান নিয়েছে, তারা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর মতো অবস্থান নিয়েছে, এদের সঙ্গে কোনো পার্থক্য নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

5h ago