৮ অক্টোবর থেকে ১০ বিভাগীয় সদরে বিএনপির সমাবেশ

মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ফটো

সাম্প্রতিক বিক্ষোভকে 'সফল' বিবেচনা করে নিত্যপণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে ৮ অক্টোবর থেকে দেশের ১০টি বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।

তারা 'রাজপথে নিজেদের উপস্থিতি' রাখতে এবং চলমান আন্দোলনের গতি বাড়াতে নতুন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

৮ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামে শুরু হয়ে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষ হওয়ার কথা রয়েছে এই বিক্ষোভ সমাবেশ।

বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী, ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে, ২২ অক্টোবর খুলনায়, ২৯ অক্টোবর রংপুরে, ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত সোমবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাজধানীর ভেতরে ও বাইরের সব কর্মসূচি সফল হয়েছে বলে আমরা দেখেছি। দলের নেতাকর্মীদের মনোভাব ও শারীরিক ভাষা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক।'

দলের স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সমাবেশ শেষ হলেই পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপির পূর্ব ঘোষিত ১৬টি প্রতিবাদ কর্মসূচি গতকাল শেষ হয়েছে।

দলটি অবশ্য পল্লবী ও লালবাগে ২টি নির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি এবং আগামী সপ্তাহে এই সমাবেশগুলো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দলের নেতারা জানিয়েছেন।

এর আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীদের দলে ফেরানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে বিএনপি।

দলটির এক সিনিয়র নেতা বলেন, 'বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই নেবেন।'

গত ২২ আগস্ট থেকে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভের আয়োজন করছে বিএনপি।

গত ৩১ জুলাই ভোলা শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও 'জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনা' নিয়ে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন বিএনপি নেতা নিহত হন।

গত ৩ আগস্ট ছাত্রদল নেতা নূরে আলম সংঘর্ষে আহত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান।

নারায়ণগঞ্জে গত ১ সেপ্টেম্বর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরেক বিএনপি কর্মী নিহত হন এবং মুন্সীগঞ্জে যুবদলের এক নেতা আহত হন। আহত ওই নেতা পরে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের স্মরণে শোক পালনে একটি দিন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি।

বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মীদের তালিকা তৈরির সরকারের উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা করেছে দলটি। তবে কীভাবে তারা এগোবে সে বিষয়ে তারা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন তাদের নেতাদের তালিকা করা হচ্ছে 'শুধুমাত্র তাদের হয়রানি করার জন্য'। যদিও এই দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে নিরূপণ করতে পারেনি ডেইলি স্টার।

দলটি 'অতিরিক্ত দামে' রাশিয়া থেকে গম কেনাকে চ্যালেঞ্জ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও পরিকল্পনা করছে।

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিগুলো সহিংসতায় রূপ নেওয়ায় তা দেশ-বিদেশে প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়ে।

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে, দলটি কোনো শক্ত আন্দোলন তৈরি করতে পারেনি।

এবারও দলটির নেতারা বলেছেন, তারা গণমুখী বিষয়ে বিক্ষোভ করবেন।

আগামী বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির শুরুতে নির্ধারিত পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Technical education hit by teacher shortage, falling enrolment

Bangladesh’s technical education sector is facing a slow-burning crisis, shaped by a severe shortage of teachers, poor infrastructure, and steadily declining student interest.

11h ago