বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশি অভিযানের অভিযোগ

সিলেটের বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যাকে কেন্দ্র করে গত রোববার বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনের স্থলে রাখা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসম্বলিত বোর্ড ভাঙচুর করার ঘটনায় মঙ্গলবার দলটির ২৫০ অজ্ঞাতনামা নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে আওয়ামী লীগ।

সিলেটের বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যাকে কেন্দ্র করে গত রোববার বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনের স্থলে রাখা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসম্বলিত বোর্ড ভাঙচুর করার ঘটনায় মঙ্গলবার দলটির ২৫০ অজ্ঞাতনামা নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে আওয়ামী লীগ।

এ মামলার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। কেবল চিহ্নিত আসামিদের ধরতেই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।

গত রোববার রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর বড়বাজার এলাকায় গাড়ি থামিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামালকে। এ ঘটনায় রাতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে নেতা-কর্মীদের একাংশ মিছিল বের করে নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনের জন্য সাজিয়ে রাখা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত বোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন ভাঙচুর করেন। পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট জাহিদ সারোয়ার সবুজ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২ শতাধিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

হামলার ঘটনায় সোমবার ও মঙ্গলবার ৪ জনকে ৫৪ ধারায় আটক করে পুলিশ। পরে তাদেরকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ইশতিয়াক আহমদ রাজু, বদরুল ইসলাম নজরুল, মিলাদ আহমদ ও রাজীব আহমদ।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী বলেন, 'রোববার রাতে আমাদের নেতা-কর্মীদের কোনো মিছিল না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তারপরও কিছু বিশৃঙ্খলাকারী মিছিল ও ভাঙচুর করেছে এবং এসব বিশৃঙ্খলাকারীর দায় বিএনপি নেবে না বলে আমরা বিবৃতিও দিয়েছি। তারপরও মামলা হয়েছে এবং পুলিশ বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'সিলেট রাজনৈতিক সম্প্রীতির শহর। এখানে আমরা এক দল অন্য দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কখনো বাধা দেই না। তাই বলব, প্রকৃত ভাঙচুরকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হোক এবং পুলিশকে অনুরোধ ১৯ নভেম্বরের মহাসমাবেশের আগে অহেতুক যাতে নেতা-কর্মীদের হয়রানি না করা হয়।'

বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িবাড়ি অভিযানের বিষয়টি অস্বীকার করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, 'পুলিশ ঢালাওভাবে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি হয়রানিমূলক কোনো অভিযান চালাচ্ছে না। আ ফ ম কামাল হত্যা মামলার আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু, ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তারে কারো বাড়িতে অভিযানে যায়নি পুলিশ। এ মামলায় প্রথম ৪ জনের গ্রেপ্তারের পর নতুন করে কোনো গ্রেপ্তারও নেই। বাড়ি বাড়ি অভিযানের অভিযোগটি সঠিক নয়।'

Comments