রাজশাহীতে ৮ মামলায় আসামি বিএনপির সহস্রাধিক নেতা-কর্মী

রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক বিএনপির

আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে জেলায় জেলায় নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

তারা বলছেন, গত ১ সপ্তাহে রাজশাহীসহ বিভাগের ৩ জেলায় নতুন করে দায়ের করা ৮ মামলায় বিএনপির ১ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ১২ জন। পুলিশি হয়রানির ভয়ে নেতা-কর্মীরা বাড়িতে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। নিজেদের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখছেন।

এমনকি পুলিশ অনেক নেতা-কর্মীর বাড়িতে গিয়ে সমাবেশে যেতে নিষেধ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছু উচ্চাভিলাষী কর্মকর্তা বিএনপির লোকদের হয়রানি করার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু তারা ভুল করছে। তারা যত বেশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, তত বেশি প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। আমরা এখন আর জেলে যেতে ভয় পাই না।'

পুলিশের পক্ষ থেকেও বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন ৮ মামলার বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। মামলাগুলো হয়েছে বিভাগের রাজশাহী, নাটোর ও জয়পুরহাট জেলায়। এর সবগুলোই ফৌজদারি মামলা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, সবগুলো মামলার বিবরণে একই রকম বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন-বিএনপির লোকজন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার জন্য বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করছিল।

যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, 'পুলিশ কাউকেই কোনো ধরনের হয়রানি করছে না। সুনির্দিষ্ট অপরাধের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলাগুলো দায়ের করা হচ্ছে। সেসব অপরাধে যারা জড়িত, পুলিশ কেবল তাদেরকেই গ্রেপ্তার করছে।'

গত শনিবার রাতে নাটোরের লালপুর উপজেলায় বিএনপির গোপালপুর পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে থেকে ৬টি ককটেল উদ্ধারের কথা জানায় পুলিশ। পরে কার্যালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ফারজানা শারমীন পুতুল এ বিষয়ে বলেন, 'বোমা উদ্ধারের ঘটনাটি সাজানো। উদ্ধারকৃত বোমার সঙ্গে বিএনপির লোকজনের কোনো সম্পর্ক নেই।'

এর আগে শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জে জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদকে বহনকারী দুটি মাইক্রোবাস হামলার শিকার হয়।

এদিন সন্ধ্যায় জয়পুরহাট সদরের শান্তিনগরে বিএনপি কর্মী মহিদুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক রাখার অভিযোগে দলের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

শনিবার রাতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে একই অভিযোগে বিএনপির ৮ জনকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি ১টি বিস্ফোরক মামলায় বিএনপির ২০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।

এসবের পাশাপাশি গত ১৫ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, মোহনপুর, বাগমারা, বাঘা ও কাটাখালি থানায় বিএনপির প্রায় হাজারখানেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়।

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলছেন, 'সমাবেশ সফল করতে যাদের কাজ করার কথা, মামলা দায়েরের পর থেকে তারা সবাই আত্মগোপনে চলে গেছেন।'

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ভাষ্য, 'বিএনপির লোকজনের সহিংসতা সৃষ্টির কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই।'

দুলুর অভিযোগ, সমাবেশে যাওয়ার জন্য বিএনপির লোকজনকে যাতে বাস-ট্রাক ভাড়া না দেওয়া হয়, সেজন্য কিছু পরিবহন মালিককে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, 'আমাদের মনে হচ্ছে অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোর আগে পরিবহন নেতারা যেমন ধর্মঘট ডেকেছিলেন, রাজশাহীতেও তেমনটাই ঘটবে। এতে আমরা বরং খুশি। কারণ এমন কিছু হলে তা শেষ পর্যন্ত আমাদের পক্ষেই যাবে। আমাদের দাবিগুলো আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছাবে।'

 

 

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

9h ago