ডেইলি স্টারকে মির্জা ফখরুল: এটা নজিরবিহীন পুলিশি সন্ত্রাস

‘পুলিশ এখনো বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে রেইড করছে। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। কার্যালয়ের ভেতরে নজিরবিহীন ভাঙচুর-সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমাদের শত শত লোককে গ্রেপ্তার করেছে। রিজভী, মহানগরের আহ্বায়ক আব্দুস সালামকে দেখলাম তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আরও অনেক নেতাকর্মীকে তুলে নিয়েছে। মহিলাদের অনেককে নিয়ে গেছে। একজন শুনেছি মারা গেছেন।’
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অবস্থান। ছবি: আসিফুর রহমান/স্টার

'পুলিশ এখনো বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে রেইড করছে। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। কার্যালয়ের ভেতরে নজিরবিহীন ভাঙচুর-সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমাদের শত শত লোককে গ্রেপ্তার করেছে। রিজভী, মহানগরের আহ্বায়ক আব্দুস সালামকে দেখলাম তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আরও অনেক নেতাকর্মীকে তুলে নিয়েছে। মহিলাদের অনেককে নিয়ে গেছে। একজন শুনেছি মারা গেছেন।'

আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টেলিফোনে কথা বলেছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

আজ দুপুর ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। পুলিশ নিজেরা ব্যাগ নিয়ে ভেতরে ঢুকেছে, এখন ওটাই তারা বিস্ফোরক হিসেবে চালাবে।'

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, 'তারা দলীয় কার্যালয়ে চাল, ডাল, খাবার-দাবার জমা করেছে বলে শুনেছি। তারা চাল-ডালের বস্তার মধ্যে ককটেল নিয়ে রেখেছে। আমরা সেখানে নাশকতাবিরোধী অভিযান চালিয়েছি।'

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বোমা রাখার খবর একদম বাজে কথা। আমি কমিশনারের সঙ্গে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন যে কিছু হবে না, আপনাদের কোনো সমস্যা নেই। তারপরও তারা এই ভয়াবহ নির্যাতন চালালো। এই নির্যাতন চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না। একটা সভ্য দেশে এটা বিশ্বাস করা যায় না।'

এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির একজনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পুলিশের হামলায় একজন ছাত্রনেতা মারা গেছেন বলে শুনেছি। আমি তার মৃত্যু বিষয়টি এখনো কনফার্ম হতে পারিনি। তিনি মহানগর পশ্চিমের সাংগঠনিক সম্পাদক। এখানে পুলিশ যে কি ভয়াবহ ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে আপনারা ভাবতেও পারবেন না। তারা সব দরজা ভেঙেছে, সবকিছু ভেঙে দিয়েছে।'

পুলিশ ব্যাগ নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে ঢুকেছে এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃঢ়ভাবে তিনি বলেন, 'আমি নিজে দেখেছি তারা ব্যাগ নিয়ে ঢুকেছে। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিলো না। তারা ব্যাগ নিয়ে ঢুকেছে। আমাকে ঢুকতে না দিয়ে তারা এই বোমার নাটকটা সাজালো।এটা নজিরবিহীন পুলিশি সন্ত্রাস।'

'১০ তারিখ অনুষ্ঠেয় বিএনপির ঢাকা সমাবেশ বানচাল করার জন্য, সমাবেশটা পণ্ড করার জন্য পুলিশ এসব করেছে', যোগ করেন তিনি।

সমাবেশ কোথায় হবে এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা চলছিল বিএনপির। আজ দুপুরে সমাবেশস্থলের বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, 'আজ দুপুর ২টায় পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। আমাদের অবস্থানের কথা আগেও যেভাবে বলেছি, আজও একইভাবে বলেছি। আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাই। সেটা না হলে বিকল্প হিসেবে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সমাবেশ করতে চাই। পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুক্ষণের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবে বলেছে, আমরা অপেক্ষায় আছি।'

এমন একটি ভালো অবস্থানের পর হঠাৎ কি এমন হলো যে পুলিশ হঠাৎ বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করতে চাইবে? জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, 'পুলিশ বলেছিল যে আজ তারা জানাবে যে সমাবেশ কোথায় হবে বা কী করা হবে। কিন্তু পরে তারা এমন ঘটনা ঘটালো। তাদের এই আচরণ পুরোটাই পরিকল্পনা করে করা।'

'আমাদের দাবি, এই মুহূর্তে আটক করা সবাইকে মুক্তি দিতে হবে, পুলিশ উইথড্র করতে হবে, যথাস্থানে সমাবেশ করতে দিতে হবে', যোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

সর্বশেষ সন্ধ্যা ৭টার দিকেও মির্জা ফখরুল বিএনপি কার্যালয়ের সামনে একা বসে ছিলেন এবং পুলিশ তাকে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে।


 

 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago