বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই: আমির হোসেন আমু

১৪ দলীয় জোটের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আমির হোসেন আমু। ছবি: সংগৃহীত

'রাষ্ট্র মেরামতে' বিএনপির ২৭ দফার রূপরেখায় 'রেইনবো নেশন' ও 'ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশন' গঠনের লক্ষ্য একই বলে মন্তব্য করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।

আজ বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু জোটের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

১৪ দল কখনই একাত্তর ও পঁচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে রিকনসিলিয়েশনের নামে, রেইনবো নেশন নামের এই সুচতুর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না দাবি করে তিনি বলেন, 'এই দুটি প্রশ্ন বহু আগেই মিটমাট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে করার কোনো প্রয়োজন নেই।'

বিএনপির ২৭ দফার অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের শাসনামলের অভিজ্ঞতা দেশবাসীর আছে জানিয়ে আমু বলেন, 'রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে বিএনপির এই রাজনীতি জনগণ অতীতে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এবারও করবে। তাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়েছেন, তারাও আমাদের অজানা নয়। খুবই ক্ষুদ্র স্বার্থে এক হয়েছেন।'

দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এর থেকে দূরে থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা।

বর্তমান সরকারের মৌলিক সংশোধনের কথা বলে বিএনপি অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলকে নিষ্কণ্টক করতে চায় বলেও দাবি করেন তিনি।

১৪ দল জোটগতভাবে মাঠে কর্মসূচি পালন করেছিল, আগামীর কর্মসূচিও সেইভাবে হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জোট সমন্বয়ক বলেন, 'আমরা আমাদের রাজনৈতিক ধারা নিয়ে মাঠে থাকব। এই ধারার বিপরীত অবস্থানে বিরোধিতা করব। বিএনপি এর আগে ১০ দফা, ১৪ দফাসহ বিভিন্ন ধরনের দফা দিয়েছিল, এগুলো নতুন কিছু না। তাদের এ আন্দোলন নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।'

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে বিভিন্ন প্রগতিশীল দলেরও অংশগ্রহণ আছে, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ চেতনায় বিশ্বাসী বা প্রগতিশীল হলে জামায়াতের সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করত না। যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা প্রগতির ধারার মধ্যে আছে বলে মনে করি না।'

রাষ্ট্র সংস্কার ও রেইনবো নেশন রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের ঐক্যের কালো দলিল বলে মনে করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদের (একাংশ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, 'কালো দলিল যারা সমর্থন করছে তারা আর যেই হোক বাম বা প্রগতিশীল ঘরানার লোক হতে পারে না। তারা বিচ্যুত। ২৭ দফা ও ১০ দফা কার্যত বাহাত্তরের সংবিধানকে বানচাল করার সুকৌশল প্রস্তাব। যারা এটা সমর্থন করেন তারা গণতান্ত্রিক না, প্রগতিশীলও না।'

জামায়াত, জঙ্গি, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে রাজনৈতিক পার্টনারশিপ যতদিন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত ২৭ কেন, ২৭০ দফা দিলেও আমলযোগ্য নয় বলে দাবি করেন ইনু।

তিনি বলেন, 'এখানে রাষ্ট্র মেরামতের নামে কার্যত বাংলাদেশে রাজাকারদের আমদানি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সেই আন্দোলনে যদি কোনো রাজনৈতিক নেতা, তিনি মুক্তিযোদ্ধা হন কিংবা কোনো বামপন্থী হন, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির কুলাঙ্গার বটে। তার সঙ্গে লেনদেন হতে পারে না।'

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দল মহানগর সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বাশার মাইজভাণ্ডারী, জাতীয় পার্টি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহম্মেদ মুক্তা, গণ আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago