‘আদানির মতো চুক্তির মধ্য দিয়ে সরকার লুট করে বিদেশে সম্পদ গড়ছে’

‘দেখুন সরকার বিদ্যুৎ চুক্তি করেছে ভারতের আদানি কোম্পানির সঙ্গে। সেই বিদ্যুৎ চুক্তি সবাই বলছেন, দেশি-বিদেশি সবাই যে, এটা অপ্রয়োজনীয় চুক্তি, অসম চুক্তি। যে কারণে বাংলাদেশকে শুধু পয়সাই দিতে হবে, বাংলাদেশ বেশি লাভ পাবে না। এই ধরনের চুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে তারা সম্পদ লুট করছে, বিদেশে সম্পদ গড়ছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ছবি

জনদুর্ভোগের মধ্যেও 'সরকার উৎসব শুরু করছে' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণের পরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'সরকারের যেহেতু জনগণের প্রতি দায়-দায়িত্ব নেই, সেই কারণে তারা এখন উৎসব শুরু করেছে। আপনি যেটা বলেছেন আজকে যে, তারা আবদুল হামিদ সাহেবের (প্রেসিডেন্ট) এলাকাতে উৎসব অনুষ্ঠান করছে।'

'তারা তো এটা স্বীকারই করতে চায় না দেশে একটা অর্থনৈতিক সংকট চলছে, দেশে মূল্যস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ আজকে চাল কিনতে পারছে না। আমি আবার শুনেছি যেটা ভয়ংকর মারাত্মক যে, ওএমএসের কার্যক্রম তারা বন্ধ করে দেবে এবং কার্ডের মাধ্যমে তারা আবার চাল বিক্রি করবে বা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করবে', বলেন তিনি।

কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপণ্য বিক্রিতে আরেকটা দুর্নীতির জায়গা খুলবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'দেখুন সরকার বিদ্যুৎ চুক্তি করেছে ভারতের আদানি কোম্পানির সঙ্গে। সেই বিদ্যুৎ চুক্তি সবাই বলছেন, দেশি-বিদেশি সবাই যে, এটা অপ্রয়োজনীয় চুক্তি, অসম চুক্তি। যে কারণে বাংলাদেশকে শুধু পয়সাই দিতে হবে, বাংলাদেশ বেশি লাভ পাবে না। এই ধরনের চুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে তারা সম্পদ লুট করছে, বিদেশে সম্পদ গড়ছে।'

তিনি বলেন, 'এই আওয়ামী লীগ সরকার, যারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি, যারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় বসে আছে, তাদের জনগণের প্রতি কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। সবচেয়ে মারাত্মক বিষয়টি হচ্ছে, সরকারের জবাবদিহিতার জন্য কোনো পার্লামেন্ট নেই। যে পার্লামেন্ট আছে, সেটা জনগণের নির্বাচিত নয়।'

'সরকার আজকে নয়, তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকে অর্থাৎ ১৪ বা ১৫ বছর থেকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই রাষ্ট্রের সব সম্পদ ভোগ করার জন্য একের পর এক বিভিন্ন রকম অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে টাকা ব্যয় করে অর্থ লুট করছে, পাচার করছে এবং বিদেশে সম্পদ গড়ে তু্লেছে', যোগ করেন তিনি।

এই অবস্থার উত্তরণে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। এই আন্দোলনে আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে রাজপথে হত্যা করেছে।'

'সেই কারণে বলছি, আন্দোলন করেই এই গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব', যোগ করেন এই বিএনপি নেতা।

সকাল ১১টায় বিএনপি মহাসচিব যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুনায়েম মুন্নাসহ নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

এই সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুন হাসানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি টুকু-মুন্নার নেতৃত্বে ২৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় বিএনপি।

গত বছরের মে'তে টুকুকে সভাপতি ও মুন্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।

নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতি ২৫ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ১৫ জন, সহসাধারণ সম্পাদক ২৫ জন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ২৫ জন, সদস্য ৭৫ জন ছাড়াও রয়েছে সম্পাদকীয় পদে নেতারা।

Comments