২৫ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির রুদ্ধদ্বার বৈঠক

দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে বিএনপি।
ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে বিএনপি।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব বর্ণনা করেন।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, জাপান, চীন ও রাশিয়াসহ ২৫টি দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন।

ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'আজকের বিষয়টা ছিল ব্রিফিং। বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনাবলী, কী ঘটছে… ২৯ জুলাই আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার ও সরকারি দলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের যে যৌথ কর্মকাণ্ড, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার ইত্যাদি বিষয়গুলো আমরা বলেছি। বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, গণতন্ত্র দেখতে চায়, গণতান্ত্রিক অর্ডার দেখতে চায়, মানবাধিকার দেখতে চায়, তাদের এসব জানা দরকার। এ কথাগুলো আমরা আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছি। আজকের ডিপ্লোম্যাটিক ব্রিফিংয়েও এই কথাগুলো বলেছি।'

'কারণ তারা জানতে চায়, কী হচ্ছে বাংলাদেশে? নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ যে পথে চলছে… ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে… বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা… প্রতিনিয়ত হচ্ছে', বলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, 'যত ঘটনা ঘটবে আমরা আপনাদের কাছে তুলে ধরব, সবাইকে বলব।'

২৮ ও ২৯ জুলাই ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ও প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর সন্ত্রাসী হামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনা কূটনীতিকদের বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আমীর খসরু বলেন, 'এ ধরনের আক্রমণ, গ্রেপ্তার, যাদের আহত করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে বিদেশে আছে, অনেকে হজে আছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা… উদ্দেশ্যটা তো বুঝাই যাচ্ছে। তাদের টার্গেট হচ্ছে আবার ভয়-ভীতি দেখিয়ে একটা নির্বাচনী কৌশলে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতা দখল করা।'

আপনাদের বক্তব্যের পর বিদেশি কূটনীতিকরা কী বলেছেন? জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, 'আমরা সার্বিক পরিস্থিতি ব্রিফ করেছি। তাদের বলার বিষয় নয়।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'দেশ ও দেশের বাইরে এদের (এই সরকার) অধীনে যে নির্বাচন হবে না... এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। সেজন্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কথাটা এসেছে।'

গুলশানে হোটেল লেকশোরে বিকেল ৪টা থেকে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। বৈঠকে কূটনীতিকদের কাছে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ২৮ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ, ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি দলের হামলা, গুলিবর্ষণ, কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ, মামলা-গ্রেপ্তারের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, শামা ওবায়েদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, নওশাদ জমির, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, নজরুল ইসলাম আজাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, রুমিন ফারহানা ও ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকটি রুদ্ধদ্বার হওয়ায় হোটেলে প্রবেশাধিকারে কড়াকড়ি ছিল। গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাও এসময় হোটেলে বাইরে অবস্থান করেন।

Comments