এটা হস্তক্ষেপ হলে একাত্তরে কী হয়েছিল, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লির কূটনৈতিক বার্তা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'যারা ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন, তাহলে একাত্তর সালে কী হয়েছিল? ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'তাদের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছেন, আমাদের লোকজনদের-শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে; সেটা কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নয়?'
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় রবীন্দ্র সরোবরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এদিন সকালে ভারত অবস্থান অপ্রত্যাশিত মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'এ কথাটা আমরা কখনোই বলতাম না, বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা দেখতে পাচ্ছি যদি এটা সত্য হয়ে থাকে তাহলে তারা বাংলাদেশের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তারা এই মন্তব্যগুলো করছে।'
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। পঁচাত্তরে আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি। তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়নি! ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতা থেকে চলে গেছি। জনগণ চায়নি, আমরা সরে গেছি। সেটাই বলবো এক কথায়। ষড়যন্ত্রের বিষয় তো আছেই। কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারটা ভারত বা কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, কাউকে ক্ষমতাচ্যুত করবে এ নিয়ে আমার মনে হয় গণতন্ত্রে যারা বিশ্বাস করে তাদের এ মন্তব্য করা অশোভন।'
'ভারতীয় ভূ-খণ্ড গিয়ে জিয়াউর রহমান সাহেব মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন, সেটা কার হস্তক্ষেপ? অভিন্ন ইস্যু; আজকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারত আর আমেরিকার এই ভূ-খণ্ডে অভিন্ন স্বার্থ আছে। অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে তারা একে অন্যকে এই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে পারে। এটা তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে, নির্বাচনের ব্যাপারে...এ পর্যন্ত ভারত একবারও বলেনি যে, তারা আমাদের এখানে অমুককে চায়-অমুককে চায় না। এ ধরনের কোনো মন্তব্য আমরা ভারত থেকে পাইনি। আর আমরাও জানি, আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপি অবশ্য কারো দিকে তাকিয়ে নেই, বিএনপি তাকিয়ে আছে শুধুমাত্র আমেরিকার দিকে—কখন নিষেধাজ্ঞা আসবে, কখন ভিসা নীতি আসবে,' যোগ করেন তিনি।
গণমাধ্যমকর্মীদের আরেক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'বিদেশে অর্থ পাচার করা করেছে এটা ধরা পড়ে গেছে। এফবিআই সাক্ষ্য দিয়েছিল। মামলায় দণ্ডিত তাদের নেতা, ২০ বছরের। পালিয়ে গেছে লন্ডনে।'
আজকে মানুষকে বাঁচানোর রাজনীতি সবার আগে মন্তব্য করে কাদের বলেন, 'আমাদের সিটি করপোরেশন, মন্ত্রণালয় প্রত্যেকে বসে আছে হাত গুটিয়ে সে কথা আমি বলবো না কিন্তু এই কর্মসূচিটি—ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান জোরদার করা উচিত। আরও সমন্বিত করা দরকার এবং জোরদার করা দরকার। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আজকে চারদিক থেকেই বিপদ, নানা রকম বিপদ আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। আজকে ডেঙ্গু থেকে সাবধান, ডেঙ্গুর মতোই ভয়ংকর বিএনপি থেকে সাবধান। আজকে দেশের প্রধান ২ শত্রু। এক শত্রু ডেঙ্গু, আরেক শত্রু হচ্ছে বিএনপি।'
এ সময় সম্মিলিতভাবে শত্রু প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, 'মানুষের জীবন ডেঙ্গুর হাতে নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদ বিএনপির হাতে নিরাপদ নয়। কাজেই এই ডেঙ্গুসহ ভয়ংকর বিএনপিকেও আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে।'
Comments