‘আ. লীগের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হলে দুঃশাসনের মাত্রা বাড়বে’

ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা। একইসঙ্গে অবিলম্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।  

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমাবেশে বক্তারা ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য বাম প্রগতিশীল শক্তিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।

সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম সবুজ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

সভায় মাসুদ রানা বলেন, 'দেশের জনগণ একদিকে অর্থনৈতিকভাবে সংকটে আছেন, অপরদিকে রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তার ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। আওয়ামী লীগের এই শাসনে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন দেশের বৃহৎ ব্যবসায়ীরা। তাদেরকে রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগ যা যা করতে হয় সব করছে। ফলে আওয়ামী লীগের ওপর জনগণ প্রচণ্ড বিক্ষুব্ধ। জনগণ পরিবর্তন চায়।'

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, অংশগ্রহণমূলক হয়নি, অথচ ফলাফল ঘোষিত হয়েছে, সেই নির্বাচন নিয়ে তো প্রশ্ন থাকবে। কথার মালা সাজিয়ে, প্রচারমাধ্যমকে ব্যবহার করে, ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি থেকে জনগণের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে না।'

তিনি বলেন, 'গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। অনিয়ন্ত্রিত  বাজার  সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো মানুষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে। দুর্নীতি-লুটপাট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সরকার সর্বত্র আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।'

তিনি বলেন, 'ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হলে দুঃশাসনের মাত্রা বাড়বে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে কেউ ক্ষমতা স্থায়ী করতে পারেনি। এবারও ভোটাধিকার বঞ্চিত করে, কৌশল করে, নির্বাচন কমিশন, আমলা আর নানা মহলকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা জনগণ রুখে দাঁড়াবে।'

বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, 'দেশে একটা ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চলছে। এই সরকার একটা ফ্যাসিস্ট সরকার। তারা জনগণের মুক্তিযুদ্ধের আবেগকে দমনের অস্ত্রে পরিণত করেছে। নিজেদের সব অন্যায়কে মুক্তিযুদ্ধের আবেগের চাদর দিয়ে তারা ঢেকে রাখতে চায়। ফলে দুর্নীতি ও দুঃশাসন চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তারা শুধু ধ্বংস করেনি, তার বিপরীতে লুটপাটের চেতনা দিয়ে দেশ শাসন করছে।'

তিনি আরও বলেন, 'পরিকল্পিত ও পালাক্রমে জিনিসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। পাশের সব দেশের চেয়ে বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের দাম বেশি। ওয়াসা, গ্যাস, বিদ্যুৎখাতে সীমাহীন লুটপাট আর দাম বাড়িয়ে দুর্নীতির বোঝা চাপানো হচ্ছে দেশের জনগণের কাঁধে।'

'তারা রাজনীতিকে দুর্বৃত্তদের আশ্রয়স্থলে পরিণত করেছে। একের পর এক কালাকানুন দিয়ে জনগণের কণ্ঠ রুদ্ধ করছে, নির্বাচনকে খেলায় পরিণত করেছে। দেশের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। আমরা দুর্নীতি-লুটপাট চাই না, এক দলীয় বা রাতের নির্বাচন চাই না, মধ্যরাতের নির্বাচন বা একা একা নির্বাচন বা রেফারিকে খেলোয়াড় বানিয়ে নির্বাচন চাই না', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

15h ago