ইসি সরকারের নির্দেশে সংলাপের নামে প্রহসন করছে: রিজভী

তিনি বলেন, আমরা জানি আপনারা (ইসি) কী করবেন। কোনো ভোট হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যাদের নামের তালিকা দেওয়া হবে, সংসদ নির্বাচনে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করবেন।
আওয়ামী লীগের কিংস পার্টি
রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের নামে সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা আজ (বৃহস্পতিবার) সংলাপের জন্য একটি চিঠি (বিএনপি কার্যালয়ে) নিয়ে এসেছেন। এটা কোন সংলাপ এবং কার জন্য?

তিনি বলেন, 'আমাদের শীর্ষ নেতাদের জেলে রেখে এবং অন্যদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে তারা কী সংলাপ চায়?'

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোর পর তাকে চিঠি পাঠানো এবং দলীয় নেতাদের বাড়িতে অভিযান অব্যাহত রাখা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করে রাখার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, 'আপনারা (ইসি) কি সংলাপের নামে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছেন? সরকারের নির্দেশে তারা (ইসি) সংলাপের নামে এই উপহাস ও প্রহসন করতে যাচ্ছে।'

'আমরা জানি আপনারা (ইসি) কী করবেন। কোনো ভোট হবে না। সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যাদের নামের তালিকা দেওয়া হবে, তাদের বিজয়ী ঘোষণা করবেন। এটা ছাড়া তিনি (সিইসি) কিছুই করতে পারবেন না,' বলেন তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, নয়াপল্টনে দলের কর্মীসহ কাউকে ঢুকতে না দেওয়ায় ৪-৫ দিন ধরে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় জনশূন্য।

তিনি বলেন, 'বিএনপির সব নেতাকর্মী আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন এবং ক্রাইম সিন ইউনিটের একটি গাড়ি দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা হয়েছে।'

রিজভী বলেন, সরকার সহিংসতার দায় দলের ঘাড়ে চাপিয়ে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিন-রাত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে এবং বিএনপি নেতাদের খুঁজে না পেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করছে।

তিনি বলেন, 'সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিপজ্জনক অভিযান চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। জাতীয় নেতাদের রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে, যা ঔপনিবেশিক আমলেও হয়নি।'

নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ, রোববারের হরতাল ও তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহে সারাদেশে ৯৬টি মামলায় অন্তত চার হাজার ৫৫৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, এ সময় পুলিশের গুলিতে ৩ হাজার ৪৭৬ জন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং একজন সাংবাদিকসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের গেটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে লেখা একটি আমন্ত্রণপত্র রেখে যান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক কর্মকর্তা। গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের দিন থেকে কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে।

রোববার গ্রেপ্তার হওয়ায় ফখরুল নিজে কারাগারে আছেন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্য শনিবার বিএনপিকে সংলাপে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি হস্তান্তর করতে বিএনপির অন্য কোনো নেতাকর্মীকেও পাওয়া যায়নি।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে শনিবার বিকাল ৩টায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের কথা রয়েছে ইসির।

বিএনপি মহাসচিবকে লেখা চিঠিতে সংলাপে তাদের দুজন প্রতিনিধি পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে ইসি।

গত শনিবার নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দলের মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

July-August protesters won't face cases: home ministry

Police have already dropped charges of committing violence and cybercrimes against all the accused in around 650 cases countrywide

1h ago