রাজনীতি

জনগণ ভোট দিলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য: আইনমন্ত্রী

‘সংবিধানের বাইরে আমরা কিছুই করব না। তার কারণ হচ্ছে জনগণ আমাদের সেই ম্যানডেট দেয়নি’
জনগণ ভোট দিলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

কোনো রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নয়, জনগণ ভোট দিলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

যেহেতু তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে, সরকার এখন রুটিন কাজ করবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আইন হবে না, কারণ সংসদ বসবে না কিন্তু এমন কথা আমি বলতে পারি না; এটা একটা স্বাধীন দেশ, যদি এমন প্রয়োজন হয় যে, অধ্যাদেশ দিয়ে আইন জারি করতে হবে কোনো বিশেষ কারণে, কোনো বিশেষ ব্যবস্থায়। কোনো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যাপারে, সেখানে আইন হবে না এ কথা তো আর আমি বলতে পারব না।'

তিনি বলেন, 'রুটিন কাজ হবে। উন্নয়ন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলমান থাকবে কিন্তু নতুন করে উন্নয়ন কাজ শুরু হবে না; যা কিছু নির্বাচনে একটা দলের পক্ষে প্রভাবিত করতে পারে সে রকম কাজ আমরা করব না।'

এখন পুলিশের কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হবে নাকি নির্বাচন কমিশনের অধীনে জানতে চাইলে ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী বলেন, 'যদি পুলিশের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য থাকে, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশন জানাবে এবং যেটা (ইসি) বলছে, সেটা যদি যৌক্তিক হয় তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই ব্যবস্থা নেবে।'

নির্বাচন কমিশন যদি কিছু বলে সেটা যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাবার অবকাশ আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আইনের আওতায় বলতে হবে সব কিছুই।'

বদলি বা পদোন্নতি নির্বাচন কমিশনের অধীনে হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেটা নির্বাচন কমিশন নেবেন কি না সেটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। এটা তো আমি বলে দিতে পারব না!'

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছে, বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে, তারা নির্বাচনে আসবে না এ কথাও বলছে। এ অবস্থায় সরকারের অবস্থান কী জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, '১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে গণপরিষদের মাধ্যমে আলোচনা-বিতর্কের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ৪ নভেম্বর সংবিধান উপহার দেন এবং ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সেই সংবিধান কার্যকর হয়।

'এর একটা প্রেক্ষিত কিন্তু আছে। এর প্রেক্ষিত হচ্ছে—আমরা যে রাষ্ট্রের অংশ ছিলাম এক সময়, পাকিস্তান আমলে। সেখানে কিন্তু কখনোই সংবিধান মানা হতো না, বরং সামরিক আইন জনপ্রিয় ছিল। সেই ক্ষেত্রে আমাদের এই সংবিধানটার বিরাট গুরুত্ব ছিল এবং জাতির পিতা সেটা আমাদের উপহার দিয়েছেন। সেই সংবিধান অনুযায়ী আমরা এখন চলব। সেই সংবিধানের বাইরে আমরা কিছুই করব না। তার কারণ হচ্ছে জনগণ আমাদের সেই ম্যানডেট দেয়নি,' বলেন আইনমন্ত্রী।

বিএনপি সেই সংবিধান অনুযায়ী চলতে চেয়েছিল—গণমাধ্যমকর্মীর প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, 'ব্যাপারটা হচ্ছে, এই সংবিধানটা নিয়ে ফুটবল খেলে উনারা উনাদের ইচ্ছা মতো একজন প্রধান বিচারপতির বয়স বাড়িতে তিনি যেন চিফ অ্যাডভাইজার হন সেই ব্যবস্থা করেছিলেন। সেটা জনগণ মানেনি। জনগণ না মানার কারণেই কিন্তু একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসতে হয়েছে এবং এই দেশে যদিও তখন তিন মাসের ম্যানডেট ছিল; তিন মাস থাকতে পারে নির্বাচন করার জন্য—তারা দুই বছর ছিল।'

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, 'গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হচ্ছে জনগণ যদি ভোট দেয়। কোন রাজনৈতিক দল আসলো নাকি আসলো না সেটা বড় ব্যাপার নয়। জনগণ যদি ভোট দেয়, সেটাই গ্রহণযোগ্য। তার কারণ হচ্ছে, জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস।'

Comments