দুর্ঘটনায় দুই হাত হারানো রফিকুল নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার

কারও সাহায্য ছাড়া রফিকুল কিছুই করতে পারেন না। কারও সাহায্য ছাড়া তিনি খেতেও পারেন না।
রফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় দুই যুগ আগে এক দুর্ঘটনায় দুই হাত হারিয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম। অথচ, নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে বুধবার রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গত ২৬ অক্টোবর করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এ মামলায় বুধবার সকালে রফিকুল ছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর ৬ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। 

রফিকুলের পরিবারের সদস্যরা জানায়, রাজনীতির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। 

বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে রফিকুল বাসা থেকে বের হওয়ার পর স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে বলে তাদের অভিযোগ।

রফিকুলের স্ত্রী হাসিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রফিকুল শারীরিকভাবে অসুস্থ ও পঙ্গু। ২০০১ সালে একটি বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। তার দুই হাতই তখন পুড়ে যায় এবং পরে কেটে ফেলতে হয়।' 

হাসিনা জানান, কারও সাহায্য ছাড়া রফিকুল কিছুই করতে পারেন না। কারও সাহায্য ছাড়া তিনি খেতেও পারেন না। এছাড়া, তিনি ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন।

তিনি বলেন, 'বুধবার ভোরে আমার স্বামী ফজরের নামাজ আদায় করে ভাটারার মাদানী এভিনিউতে হাঁটতে বের হন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন তাকে পিকেটার সন্দেহ করে নির্মম নির্যাতন করে পুলিশে সোপর্দ করে।'

ঢাকার একটি আদালত বৃহস্পতিবার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রফিকুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানতে চাইলে ভাটারা থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃতরা জামায়াতের লোক। তারা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের পুলিশে সোপর্দ করে। আমরা তাদের ব্যানারও জব্দ করি।'

আদালতে দেওয়া চিঠিতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে সরকার পতনের উদ্দেশে নাশকতামূলক কাজ করতে একত্রিত হয়েছিল। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতিকালে তাদের আটক করা হয়।

Comments