কারাগারে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীরা: রিজভী

‘আইজি প্রিজন কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত করে সারা দেশের কারাগারগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বার ও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছেন।’
রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির বন্দী নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতে বিএনপির সব বন্দীদের সব ধরনের সাধারণ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান আইজি প্রিজন মৌখিকভাবে সব কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।'

আজ শবিবার ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেন তিনি।

এই বিএনপি নেতা বলেন, 'আইজি প্রিজন কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত করে সারা দেশের কারাগারগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বার ও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছেন।'

তিনি বলেন, 'নির্যাতনের কারণে কারাগারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন বিপাকে পড়েছেন।'

রিজভী দাবি করেন, কারাবন্দি বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারের ভেতরের কক্ষ থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের বন্দীদের সঙ্গে দেখা করতে, তাদের জন্য জামাকাপড় দিতে এবং ফোনে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কারাগারগুলো এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হওয়ায় কারাগারগুলো এখন প্রকৃত সামাজিক অপরাধীদের জায়গা নয়। সুতরাং, তিনি সেখানে ফ্যাসিবাদের নিপীড়নের সব পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। জেলখানায় তিনি (শেখ হাসিনা) তার আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনা চান বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তারের আগে বাইরে যেমন হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, কারাগারেও তারা তেমনি নির্যাতিত হন।'

রিজভী বলেন, 'কারাগারের ভেতরে ভয়াবহ নিপীড়ন চলছে। এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। এই নিপীড়ন ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতিমাত্রায় উৎসাহী কর্মকর্তারা আমাদের দলের বন্দীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।'

তিনি বন্দীদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রাক্কালে শাহবাগ থেকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের তাড়িয়ে দেওয়া এবং জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশে বাধা দেওয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপির জেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

তিনি বলেন, 'জোরপূর্বক গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা নিজেদের পক্ষে কথা বলতে পারেন না। গুম, ক্রসফায়ার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এই সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়, যাতে তার অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে না পারে।'

রিজভী দাবি করেন, আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ বিএনপির ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের ২০ হাজার ৬৬৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Comments